New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/07/Mamata-Banerjee-21-july-rally.png)
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
'২৪-এ বিজেপির দৌড় থামাতে একুশের মঞ্চেই কর্মীদের স্পষ্ট বার্তা দিতে মুখিয়ে তৃণমূলনেত্রী।
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
২০১৮-এর ২১ জুলাই শহিদ দিবসের পর ২০১৯-এ ছিল লোকসভার নির্বাচন। ২০১৮-এ ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচন। তখনও ভোট লুট ও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। ২০২৩-এ হল পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০২৪-এ লোকসভা ভোট। ফের নির্বাচন নিয়ে একই অভিযোগ বিরোধীদের। বছর পৃথক হলেও সন্ধিক্ষণ প্রায় এক। সেই সময় পরের বছর বিজেপি বিরোধী জোটের নেতৃত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেডের জনসভায় হাজির হয়েছিলেন। এবার সদ্য বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া' গঠন করা হয়েছে। বেঙ্গালুরুর সভায় হাজির ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও সিপিএম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। আগামিকাল, শুক্রবার শহিদ মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। নজর থাকবে অভিষেকের বক্তব্যের দিকেও। গতবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে প্রথম শহিদ দিবসে ভাষণ দিলেও এখন তৃণমূলে তাঁর কতৃত্ব প্রশ্নাতীত।
২৬ দলের 'ইন্ডিয়া' জোটে আছে তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএমও। এখানে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি লড়াই চলছে তৃণমূলের। এরাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সমানতালে লড়াই চলবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সিপিএম ও রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব। 'ইন্ডিয়া' জোটে রাজ্যের এই তিন দল সামিল হওয়ায় বিতর্ক বাড়তে থাকে রাজ্য-রাজনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সেলিম জানিয়ে দিয়েছেন, এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
পাঁচ বছর আগে এই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেই আওয়াজ তোলা হয়েছিল ৪২-এ-৪২। যদিও নির্বাচনে সেই স্লোগান বাস্তবায়িত হয়নি। ২২-এ থেমে ছিল তৃণমূলের অশ্বমেধের ঘোড়া। এমনকী দিল্লির তখতের দিকে নজর ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরা হয়েছিল। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর বলা হচ্ছিল একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই পারে বিজেপিকে হারাতে। তাই গোয়া, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে হানা দিয়েছিল ঘাসফুল শিবির। কিন্তু ওই তিন রাজ্যের ব্যর্থতা, পরবর্তীতে হিমাচলপ্রদেশ, কর্নাটকে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর ঢোক গিলতে বাধ্য হয় তৃণমূল। ২১-এর মঞ্চ থেকে রাহুলকে ফেবারিট বলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস সম্পর্কে কী বার্তা দেন সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি ইয়েচুরির দল সিপিএম নিয়ে তৃণমূল কী ভাবছে তা-ও লক্ষ্য রাখছে অভিজ্ঞমহল।
ধর্মতলার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে নতুন কি ঘোষণা করেন মমতা-অভিষেক, তা শুনতে হাজির হবেন দলের নেতৃত্ব, কর্মী ও সমর্থকরা। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্য থেকে সর্বাধিক আসন পেতে তৃণমূল নেতৃত্ব বিশেষ নির্দেশ দেবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তার জন্য প্রকাশ্য কৌশল বা প্রচারের কথা ঘোষণা করবে তৃণমূল। 'ইন্ডিয়া' জোটে থেকে কিভাবে তৃণমূল লড়াই করবে সেই বার্তা দেবেন মমতা।
১৯৯৩-এর ২১ জুলাই মূলত 'নো আই কার্ড নো ভোট'-এর দাবিতে কলকাতার রাজপথ উত্তাল হয়েছিল। তখন ছিল এরাজ্য থেকে সিপিএমকে হঠানোর আন্দোলন। এখন দিল্লিতে বিজেপিকে সরানোর প্রচেষ্টা। তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতার বদ্ধমূল ধারণা ছিল পরিচয়পত্র ছাড়া ভোট হলে সিপিএমকে সরানো যাবে না। নির্বাচনে পরিচয় পত্র বাধ্যতামূলক করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস গঠিত হওয়ার পরও এই দিনটি শহিদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, যতই বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে হাসি বিনিময় হোক সিপিএমের সঙ্গে এখানে আপোষ করতে পারবে না তৃণমূল। পাশাপাশি মোদীকে কেন্দ্র থেকে হঠাতে বার্তা দেবেন তৃণমূল নেত্রী।