৬ জুলাই ঢেউয়ের উল্টে যায় ট্রলার। ফুঁসতে থাকা ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যান মৎস্যজীবী রবীন্দ্রনাথ দাস এবং তাঁর সঙ্গীসাথীরা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে যা অবধারিত, তা ঘটে নি। অসম্ভবকে সম্ভব করে সেদিন থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই সমুদ্রে ভেসে থাকেন কাকদ্বীপের এই মৎস্যজীবী। অবশেষে বাংলাদেশের কিছু নাবিক তাঁকে উদ্ধার করেন। তখনও শরীরে রয়েছে প্রাণ, তবে জলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছেন রবীন্দ্রনাথ। বর্তমানে বাংলাদেশের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মাঝসমুদ্রের ঝড়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে তলিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শী
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা বিজন মাইতি জানান, “বুধবার সন্ধের সময় বাংলাদেশ থেকে খবর আসে, এবং আমরা সেখানকার মৎস্যজীবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁরা বলেন, রবীন্দ্রনাথ দাস জানিয়েছেন, বেশ কয়েকদিন ধরে ভাসছিলেন তিনি। চট্টগ্রামের এক পণ্যবাহী জাহাজ ওঁকে উদ্ধার করে। এখন চট্টগ্রামের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমি কাকদ্বীপের মহকুমা শাসককে জানিয়েছি, রবীন্দ্রনাথকে যত শীঘ্র এদেশে ফিরিয়ে আনা যায় তার ব্যবস্থা করতে। তবে দুঃখের বিষয়, একই দিনে সমুদ্রে যাওয়া আরও অনেকের সন্ধান পাওয়া যায় নি, ২৪ জন এখনও নিখোঁজ”।
আরও পড়ুন: কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হাতে মৃত্যু মহিলার
সূত্রের খবর, বৃষ্টির দেখা নেই এবছর। ইলিশের বাজার খারাপ। চিন্তায় মাথায় হাত উঠেছিল মৎস্যজীবীদের। তাই আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীরা কেদো দ্বীপ থেকে চারটি ট্রলার নিয়ে রওনা দেন মাছ ধরতে। শনিবার বাংলাদেশের জলসীমার কাছে বঙ্গোপসাগরে উত্তাল সমুদ্রের মুখে পড়েন তাঁরা। সেদিনই বিশাল ঢেউয়ের ধাক্কায় একইসঙ্গে উল্টে যায় চারটি ট্রলার। বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও নিখোঁজ ২৪ জন।
জানা গিয়েছে, চারটি ট্রলারের নাম এফবি দশভূজা, এফবি নয়ন-১, এফবি বাবাজী, এফবি জয়যোগী। এই চারটির মধ্যে দুটি ট্রলার ডুবে গেলেও বেঁচে আছেন সেগুলিতে থাকা মৎস্যজীবীরা। বাকি দুটি ট্রলার থেকে ছ’জনকে উদ্ধার করা গেলেও এখনও বাকিদের খোঁজ পাওয়া যায় নি।