গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে। শুনশান রাস্তা থেকে আদিবাসীকে মহিলাকে ‘অপহরণ’। মুখ চাপা দিয়ে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ। বিধ্বস্ত অবস্থায় মহিলাকে ফেলে রেখে চম্পট দুষ্কৃতীদের। নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে পুলিশ। একজনকে আটক করে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
মন্তেশ্বরের একটি এলাকায় রবিবার রাতে ফাঁকা একটি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন আদিবাসী এক মহিলা। আচমকা কয়েকজন এসে তাঁর মুখ চাপা দিয়ে তুলে নিয়ে চলে যায়। নির্জন একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে মহিলাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। মহিলার স্বামী তাঁকে বাঁচাতে গেলে বেধড়ক মারধর করে দুষ্কৃতীরা। এরপরেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মহিলাটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রথম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় আদিবাসী ওই মহিলাকে। পরে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় ওই মহিলাকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে মন্তেশ্বরের ওই এলাকায় রাস্তার পাশে কাতরাচ্ছিলেন এক আদিবাসী মহিলা। তাঁর স্বামী মহিলার চোখে-মুখে জল দিচ্ছিলেন। পথচলতি বাসিন্দারা ঘটনাটি দেখে বিস্তারিতভাবে জানতে চান। তখনই মহিলার স্বামী তাঁর স্ত্রীর উপর রবিবার রাতে হওয়া নির্যাতনের কথা স্থানীয়দের জানান। স্থানীয়দের মাধ্যমে সেই খবর পৌঁছোয় মন্তেশ্বর থানার পুলিশের কাছে। পুলিশ গিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে।
আরও পড়ুন- ২৬০০ টাকার বিনিময়ে হাতে ভুয়ো স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, শ্রীঘরে ব্যবসায়ী
অসুস্থ শরীরে ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যায় তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে মন্তেশ্বরের রাইগ্রামের বাজারে গিয়েছিলেন। বাজারে কাজ মেটাতে তাঁদের দেরি হয়। তাঁর স্বামী রান্না করবেন বলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যান। রবিবার সন্ধেয় একাই ওই পথে বাড়ি ফিরছিলেন মহিলা। অন্ধকার রাস্তায় কিছুটা এগোতেই কয়েকজন তাঁর মুখ চাপা দিয়ে নির্জন একটি জায়গায় তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। সেখানেই শুরু হয় পাশবিক নির্যাতন।
মহিলার স্বামী পুলিশকে জানিয়েছেন, বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে গেলেও স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। রাতের অন্ধকারেই স্ত্রীর খোঁজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি। পরে পুকুর পাড়ের একটি নির্জন জায়গায় স্ত্রীর আর্তনাদ শুনতে পান। স্ত্রীকে বাঁচাতে দ্রুত সেখানে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে। এরপরেই তাঁদের ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা।
আরও পড়ুন- ‘কেন্দ্রের পরিকল্পনার অভাবে ফি বছর বঙ্গে বন্যা’, মোদিকে চিঠি লিখে অভিযোগ মমতার
স্ত্রীকে উদ্ধার করে রাস্তার ধারে ক্যানেল পাড়ে নিয়ে গিয়ে বসেন তিনি। স্থানীয়দের মাধ্যমেই গোটা ঘটনা পরে পুলিশকে জানানো হয়। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কেস রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন