NPPA increases drug prices : আগুনে খুন্তি পুড়িয়ে সিপিএম-বিজেপিকে ছ্যাঁকা দেবার নিদান দিলেন বর্ধমান আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডে দণ্ডিত তৃণমূলের নেত্রী। যাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
'আগুনে খুন্তি পুড়িয়ে সিপিএম-বিজেপিকে ছ্যাঁকা দিন', প্রকাশ্য জনসভা থেকে এমনই নিদান দিলেন তৃণমূল নেতার বাবাকে খুনের চেষ্টার মামলায় সদ্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়া বর্ধমানের তৃণমূলের নেত্রী কাকলি তা গুপ্ত। ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে শনিবার বিকেলে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বর্ধমান ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস।ব্লকের গোপালপুর অনুষ্ঠিত সেই প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে সিপিএম ও বিজেপিকে নিশানা করেন অস্থায়ী জামিনে থাকা কাকলি তা গুপ্ত।তিনি বলেন ,'এলাকায় সিপিএম-বিজেপির কেউ এলে আগুনে খুন্তি পুড়িয়ে ছ্যাঁকা দিন। যেন তারা জ্বলতে জ্বলতে এলাকা ছাড়া হয়'।
সদ্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়া শাসক দলের একজন নেত্রীর এহেন হুমকি ভাষণ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল নেতার বাবাকে খুনের চেষ্টার মামলায় কয়েক দিন আগেই বর্ধমান আদালত কাকলি তা গুপ্তকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে,“ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৭ সালে পূর্ব বর্ধমানের নাড়ীগ্রামের দাসপাড়ায় । তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী সংঘর্ষের সেই ঘটনায় জখম হন তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসেরই পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পালের বাবা দেবু পাল।তাঁর চোখ নষ্ট হয় ।
এই ঘটনা মেনে নিতে না পেরে দেবু পালের স্ত্রী সন্ধ্যারাণী পাল বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ,শাসকদলের ক্ষমতাসীন নেতারা দেবু পালকে বেধড়ক মারধর করে। তাতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এই মামলায় বর্ধমান আদালতের ফাস্ট ট্রাক সেকেণ্ড কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্র গত ২৮ মার্চ রায় ঘোষণা করেন। বিচারক বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা বর্ধমান ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কাকলি তা গুপ্তের তিনবছর কারাদণ্ড এবং ৫০০০ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন।একই মামলার বর্ধমান ১ নম্বর ব্লকের যুব সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানস ভট্টাচার্য,দলের নেতা শেখ জামাল, কার্তিক বাগ সহ ১২ জন অভিযুক্তকে ১০ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বর্ধমান আদালতের
ফাস্ট ট্রাক সেকেণ্ড কোর্টের বিচারক।
খুনের চেষ্টা,মারধর সহ একাধিক ধারায় মামলায় বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা বর্ধমান ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কাকলি তা গুপ্ত, ব্লকের যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য,পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক বাগ এবং রায়ান ১ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি সেখ জামাল সহ ১৩ জনকে ২৪ মার্চ দোষী সাব্যস্ত করেন বর্ধমানের ফাস্ট ট্রাক সেকেণ্ড কোর্টের বিচারক। সেদিন আদালত থেকে সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে অসুস্থ বোধ করায় কাকলি তা গুপ্ত , মানস ভট্টাচার্য, কার্তিক বাগ এবং সেখ জামালকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিকেলের জরুরী বিভাগে।
বুকে তীব্র ব্যাথা ও ইসিজি রির্পোটে সমস্যা থাকায় সেখান থেকে কাকলি তা গুপ্ত -কে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজের উইংস অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। যদিও সাজা ঘোষণার দিনই সাজাপ্রাপ্ত কাকলি তা গুপ্তের আস্থায়ী জামিন মঞ্জুর হয়। কাকলি তায়ের জামিনের জন্য তার আইনজীবী ওইদিনই রিট পিটিশন জমা দেন বর্ধমান আদালতের ফাস্ট ট্রাক সেকেণ্ড কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের কাছে। তিনি ২০ হাজার টাকার বেলবণ্ডের বিনিময়ে পিটিশন গ্রহণ করে অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন। হাইকোর্টে জামিনের জন্য কাকলি তা গুপ্ত আবেদন করেছেন বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
এত কাণ্ডের পরেও হুমকি ভাষণ দেওয়া নিয়ে কাকলি তা গুপ্তকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি নেতৃত্ব । বিজেপি নেতা দেবজ্যোতি সিংহ রায় বলেন, “আদালতে সাজা প্রাপ্ত হয়েও কাকলি তা গুপ্তের কোনো চেতনা হয় নি।উনার উচিত রামনবমীর মিছিলে মুখে চুনকালি লাগিয়ে হাঁটা।"