অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছে ফেডারেশন অফ ওয়েষ্টবেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্য়াসোসিয়েশন। সোমবার (আজ) থেকে বাংলাজুড়ে ৫ লক্ষের উপর ট্রাক রাস্তায় না চললে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উপর এর বিরাট প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। জানা যাচ্ছে, ৬ দফা দাবির ভিত্তিতে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, শুধু জাতীয় সড়কগুলিই নয়, বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকাতেও দাঁড়িয়ে আছে কয়েক হাজার ট্রাক। অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, শুধুমাত্র বনগাঁ সীমান্তেই দাঁড়িয়ে রয়েছে ৩-৪ হাজার ট্রাক।
ধর্মঘটের পিছনে ৬ দফা দাবি কী কী?
* ভারত সরকারের নতুন এক্সেল লোড চালু করা।
* গ্রীন পুলিশ, ডাকবাবু, সিভিক পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ এবং থানার লাগাতার পুলিশি অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।
* লোডিং পয়েন্টে ওভারলোডিং বন্ধ করতে হবে।
* পেট্রল ও ডিজেলের অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে জিএসটি বসাতে হবে।
* প্রতিবছর থার্ড পার্টি ইনসিওরেন্স প্রিমিয়াম বন্ধ করতে হবে।
* আরটিও, পুলিশি ঝামেলা ও টাকা তোলা বন্ধ করতে হবে।
এক্সেল লোডের সমস্যাটি ঠিক কী?
ধরা যাক, একটি দশ চাকার ট্রাক পার্মিট পাওয়ার সময় গাড়ির ওজন সমেত মোট ২৯টন বহন করার ছাড়পত্র পেল। ফলে স্বাভাবিকভাবে ভারতের যেকোনও অঙ্গ রাজ্যেই সংশ্লিষ্ট গাড়িটি ওই ওজন বহন করতে পারে। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ২৫টনের বেশি ওজন বহন করতে দেওয়া হয় না। এরফলে, এ রাজ্যে গাড়িটি ওভার লোডিং-এর অভিযোগে আইনি সমস্যার সম্মুখীন হয়।
ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক সজল ঘোষ বলেন, "রাজ্যে দীর্ঘ দিন ধরে পুলিশি অত্যাচার চলছে। সরকার এখনও আমাদের কোনও দাবি মানেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় আমাদের দাবি না মানলে ধর্মঘট তুলব না। রাজ্যের ট্রাক মালিকরা আমাদের আন্দোলনের দিকে তাকিয়ে আছেন।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক মালিক বলেন, "ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৫ লক্ষের উপর ট্রাক ধর্মঘটে নেমেছে। নানা ধরনের পুলিশ-প্রশাসনিক জুলুম ও আর্থিক কারণে রাস্তায় গাড়ি নামনো যাচ্ছে না। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে আমাদের। তাই বাধ্য হয়ে গাড়ি নিজেরাই দাঁড় করিয়ে দিয়েছি।"
পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম এই ট্রাকের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ফলে সবজি-আনাজ, মাছ-সহ নিত্য়প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পেতে বাধ্য। এর ফলে অশনি সংকেত দেখছেন পাইকারি, খুচরো বিক্রেতা-সহ সাধারণ মানুষও।