ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় কলেজ পড়ুয়া দুই ছাত্র-ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য মালদহ শহরের এয়ারপোর্ট চত্বরে। মঙ্গলবার সকালে মালদহ শহরের ঘোড়াপীর এলাকার এয়ারপোর্টের পরিত্যক্ত জঙ্গলে ওই দুই কলেজ পড়ুয়ার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ভাঙাচোরা অবস্থায় একটি বাইক উদ্ধার হয়েছে।
এদিকে, দুই কলেজ পড়ুয়ার পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের বাড়ির ছেলেমেয়েদের খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রাতের অন্ধকারে এয়ারপোর্টের নতুন রানওয়েতে বাইক রেসিং করতে গিয়েই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ওই দুই তরুণ-তরুণীর। মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কলেজ পড়ুয়ার নাম রনি দাস (২২)। তাঁর বাড়ি এয়ারপোর্ট সংলগ্ন বাগবাড়ি এলাকায়। মৃত কলেজ ছাত্রীর নাম শাম্বিকা রায় (১৮)। তাঁর বাড়ি তেলিপুকুর এলাকায়। রনি দাস বি-টেক পাঠরত ছিলেন এবং শাম্বিকা মালদহ ওমেন্স কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
এদিকে, মৃত ছাত্রের আত্মীয় জয়রাম মণ্ডল ও মৃত ছাত্রীর কাকা বাপ্পা রায় জানিয়েছেন, রাতে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বাড়ি ফেরেনি। সন্ধেয় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ার কথা বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল তাঁরা। রাতে তাঁদের কোনও খোঁজ না পেয়ে সকালে পুলিশের দ্বারস্থ হয় দুই পরিবার। ইতিমধ্যে প্রতিবেশীদের মারফত তাঁরা জানতে পারেন, এয়ারপোর্টের পরিত্যক্ত জঙ্গলে দুজনের দেহ পড়ে রয়েছে। সঙ্গে একটি নতুন মোটরবাইকও ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এরপরই ঘটনাস্থলে যান দুই পরিবারের সদস্যরা। তবে দুই পরিবারের দাবি, তাঁদের ছেলেমেয়েদের খুন করেছে দুষ্কৃতীরা।
আরও পড়ুন- বিপ্লব দেবকে ‘কুরুচিকর’ আক্রমণ! ফিরহাদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের ত্রিপুরায়
এদিকে তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বলা যাবে। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রনি দাসের বাইকে ওই কলেজছাত্রী চেপেছিলেন। রাতের অন্ধকারে সম্ভবত এয়ারপোর্টের রানওয়েতে বাইক রেসিং চলছিল। সেখানে দুর্ঘটনার কারণেই দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহের কাছে মানিব্যাগ, মোবাইল, সোনার আংটি বা যাবতীয় সামগ্রী পাওয়া গেছে। দুজনের মাথায় হেলমেট ছিল না। মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মালদহের ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথ জানিয়েছেন, মৃত দুই কলেজ পড়ুয়ার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যু ঘটে থাকতে পারে ওই দুজনের। তবে রাতের অন্ধকারে এয়ারপোর্টের ভিতরে কীভাবে তাঁরা ঢুকে পড়লেন তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন