Advertisment

মুরগীর খাবার বিক্রির আড়ালে কোটি-কোটি টাকার হেরোইনের কারবার, ধৃত বাবা-ছেলে

আন্তঃরাজ্য হেরোইন পাচার চক্রের অন্যতম দুই পাণ্ডা ধৃত বাবা-ছেলে। ধৃতদের জেরা করে গোটা চক্রকে ধরতে তৎপর এসটিএফ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Two members of an interstate heroin trafficking ring arrested from Burdwan

এসটিএফের জালে আন্তঃরাজ্য হেরোইন পাচারকারীরা। ছবি: প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়

বর্ধমান শহরে মুরগির খাবার বিক্রির আড়ালে চলছিল হেরোইন তৈরি ও পাচারের রমরমা কারবার। স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের অভিযানে পর্দা ফাঁস বেআইনি এই কারবারের। পুলিশের জালে আন্তঃরাজ্য হেরোইন পাচারকারীরা। এসটিএফের অভিযানে গ্রেফতার ২। ধৃতরা সম্পর্কে বাবা ও ছেলে। চক্রের সহ্গে যুক্ত চারজনকে আগেই এসটিএফ ধরে ফেলেছিল। ধৃতদের নিয়েই রবিবার রাতে বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের কাছে গ্লাস ফ্যাক্টরি এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান চলে। বাকি ২ জন গ্রেফতার হয় সেই বাড়ি থেকেই।

Advertisment

এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের শ্রীপল্লি থেকে গ্রেফতার বাবর মণ্ডল ও রাহুল মণ্ডল। সম্পর্কে এরা বাবা ও ছেলে। ধৃতদের আদি বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে। তবে ১০ বছর আগে সেখান থেকে চলে এসে তারা ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বর্ধমানে পালার-শ্রীরামপুর এলাকায় থাকতে শুরু করে। পরে তাঁরা শহর বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের কাছে গ্লাস ফ্যাক্টরি এলাকায় একটি বাড়িতে উঠে আসে।

রবিবার রাতে এসটিএফ বাবর মণ্ডল ও রাহুল মণ্ডলদের বর্ধমানের ডেরায় অভিযান চালিয়ে ১৩ কেজি হেরোইন ও হেরোইন তৈরির রাসায়নিক উপকরণ বাজেয়াপ্ত করেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৬৫ কোটি টাকা বলে এসটিএফের দাবি। এছাড়াও ধৃতদের ডেরা থেকে উদ্ধার হয়েছে ২০ লক্ষ ১০ হাজার ১০০ টাকা।

বাকি চার ধৃতের মধ্যে ২ জন ওড়িশা ও ২ জন মণিপুরের বাসিন্দা। এঁদের বিষয়ে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা মামলা রুজু করেছে। হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট মামলার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন বাবর মণ্ডল ও তাঁর ছেলে বর্ধমানের ডেরায় হেরোইন তৈরি করে ওড়িশা ও মণিপুরে পাচার করতো।

জানা গিয়েছে, হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার রুজু হওয়া একটি মামলার সূত্র ধরে এসটিএফ ওড়িশা ও মণিপুর থেকে ৪ মাদক-পাচারকারীকে গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন বর্ধমানের দু’জনের কাছ থেকে তাঁরা মদকদ্রব্য কেনে। বর্ধমানের মাদক কারবারিদের ৫ জন এজেন্ট ওড়িশাতে থাকার কথাও জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে। এমনকী বর্ধমানে দৈনিক ৪-৫ কোটি টাকার মাদক তৈরি হয়ে পাচারের তথ্যও তদন্তকারীদের কাছে উঠে আসে। এরপরেই রবিবার রাতে এসটিএফ কর্তা আমিনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বর্ধমানের শ্রীপল্লিতে বাবর মণ্ডল ও রাহুল মণ্ডলদের ডেরায় অভিযান চালানো হয়।

আরও পড়ুন- পারিবারিক বিবাদের জের, অন্তঃসত্ত্বাকে পিটিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ

এসটিএফের দাবি, বাবর ও রাহুলদের বর্ধমানের ডেরা থেকে ১৩ কেজি হেরোইন, হেরোইন তৈরির রাসায়নিক উপকরণ ও নগদ ২০ লক্ষেরও বেশি টাকা ছাড়াও টাকা গোনার যন্ত্র এবং অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। দু’টি বাড়ির ভিতরে বস্তা-বন্দি করে বড় বড় প্লাস্টিক ড্রামের ভিতরে হেরোইন ও অন্যান্য সামগ্রী লুকিয়ে রাখা ছিল।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, বর্ধমানে বাবর ও রাহুলের গোপন ডেরায় যে হেরোইন তৈরি হত তার কাঁচামাল আসত মণিপুর থেকে। হেরোইন তৈরির পর তা পাচারের জন্য দেওয়া হত ওড়িশার এজেন্টদের হাতে । হেরোইনের কারবারের চক্রে বর্ধমানের আর কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা সেই বিষয়টি নিয়েও এসটিএফ খোঁজ-খবর চালাচ্ছে।

এদিকে, বর্ধমান থেকে এসটিএফ কোটি-কোটি টাকার হেরোইন-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেলেও পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারেই ছিল। এদিন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় বলেন, ''এই বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারবো না''।

West Bengal Arrest police STF burdwan East Burdwan
Advertisment