বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় শীঘ্রই UNESCO-এর তরফে 'হেরিটেজ' স্বীকৃতি পেতে চলেছে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়কে হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করা হচ্ছে। এটি হবে বিশ্বের প্রথম হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয়। আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়া বাকি সব কিছুই করা হয়েছে। ওই বৈঠক সম্ভবত এপ্রিল বা মে মাসে হবে। সাধারণত একটি স্মৃতিস্তম্ভকে হেরিটেজ ট্যাগ দেওয়া হয়। বিশ্বে এই প্রথমবারের মতো, একটি জীবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় যা পুরোদমে কাজ করছে, তাকে ইউনেস্কো থেকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।”
আরও পড়ুন- কবিগুরুর শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্বীকৃতি ইউনেস্কোর, আগেই লিখেছিল iebangla.com
১৯২১ সালে ১১৩০ একর জমিতে বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯২২ সালের মে মাসে বিশ্বভারতী সোসাইটি একটি সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত না হওয়া পর্যন্ত এটি নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামেই ছিল। রবীন্দ্রনাথ তাঁর বেশ কিছু সম্পত্তি, জমি এবং একটি বাংলো সেই সময়ে বিশ্বভারতী সোসাইটিকে দান করেছিলেন। স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত এটি একটি কলেজ ছিল এবং ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়া হয়। বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং দ্বিতীয় উপাচার্য ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ঠাকুরদা।
আরও পড়ুন- মুখ ফসকে ‘বিপত্তি’! ‘ভুল’ সংশোধনে মমতাকে সময় বেঁধে দিল মতুয়ারা
রবীন্দ্রনাথ মুক্ত চিন্তার শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই ব্যবস্থাই চালু করেছিলেন। যা আজও প্রচলিত রয়েছে। এপ্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর ওই আধিকারিক বলেন, "পৃথিবীতে আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ধারাবাহিকভাবে সাংস্কৃতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন- UNESCO-র ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তালিকায় রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন, বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট থেকে মেলা তথ্য অনুযায়ী, “১৯২২ সালে বিশ্বভারতী শিল্প, ভাষা, মানবিক, সঙ্গীতের অন্বেষণের সঙ্গে সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এখানে হিন্দি শেখার প্রতিষ্ঠান (হিন্দি ভবন), চিন-এশীয় অধ্যয়ন (চিনা ভবন), মানবিক কেন্দ্র (বিদ্যা ভবন), চারুকলা ইনস্টিটিউট (কলা ভবন) এবং সঙ্গীতের জন্য (সঙ্গীত ভবন) আলাদা ভবন রয়েছে।" বিশ্বভারতীর হেরিটেজ স্বীকৃতির বিষয়টি পরিকল্পনার মধ্যে আনা হয় ২০১০ সালে। ওই বছরেই কবিগুরুর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী ছিল। সেবছর শান্তিনিকেতনকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করার জন্য দ্বিতীয়বার আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক।