বাংলায় 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ করতেই রেরে করে উঠেছে রাজ্য়ের হিন্দুত্বপন্থী সংগঠনগুলি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কড়া সমালোচনা করছে আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাঁদের বক্তব্য়, 'সত্যি ঘটনা লুকিয়ে রাখার পাশাপাশি ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘুদের সন্তুষ্ট করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এই সংগঠনের কর্তারা চাইছেন, বাংলার হিন্দুদের দুর্দশার কথা তুলে ধরতে বেঙ্গল ফাইলস হওয়া অত্যন্ত জরুরি।'
কেরালা ফাইলস নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে আরএসএসের দক্ষিণবঙ্গের সম্পাদক জিষ্ণু বসু বলেন, 'সত্য়ি ঢেকে রাখার প্রয়াসের জন্য় বাঙালি হিন্দু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। বাঙালি হিন্দুর অস্তিত্ব বিপন্ন, তাঁদের সত্য়ি কথা জানতে দেওয়া হয় না। সত্য়ি কথা জানতে দেওয়া উচিত। সত্য়ি না মিথ্য়া তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হতে পারে, তদন্ত হতে পারে। সত্যিকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।' তবে সত্যিকে লুকিয়ে রাখা যায় না। আরএসএস চাইছে অবিলম্ব বেঙ্গল ফাইলস হোক। জিষ্ণু বসু বলেন, 'বাঙালি হিন্দুর অস্তিত্ব ৭০-৮০ বছরে বিপন্ন হয়ে গিয়েছে। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই এপার-ওপার দুই বাংলায় বাঙালি হিন্দুর সংখ্যা শতাংশের হারে কমেছে। তা নিয়ে বেঙ্গল ফাইলস হওয়া উচিত।'
আরও পড়ুন- বাংলায় বাঙালি পরিচালকের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ, নির্দেশ মমতার
দ্য কাশ্মীর ফাইলস, দ্য কেরালা স্টোরি সিনেমা নিয়ে বিতর্ক দানা বেধেছে। মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় কেরালা স্টোরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় বিতর্ক আরও বেড়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সর্বভারতীয় সাংগঠনিক সহসম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, 'কেরলসহ সারা রাজ্য়ে এই সিনেমা চালু রয়েছে। শুধু এই রাজ্যে নিষিদ্ধ করা হল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছেন। পাশাপাশি, বাঙালি পরিচালকের সিনেমা নিষিদ্ধ করে বাংলাবাসীকে অপমান করলেন তিনি। একইসঙ্গে লাভ জেহাদকে সমর্থন করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।'
কেরালা স্টোরি নিষিদ্ধের পিছনে সংখ্যালঘুদের সন্তুষ্ট করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শচীন্দ্রনাথ সিনহা। তিনি বলেন, 'এই সিনেমা নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে ৩০ শতাংশ সংখ্য়ালঘু ভোট মজবুত করতে চাইছেন তিনি। সংখ্যালঘুদের সন্তুষ্ট করা হচ্ছে।' বেঙ্গল ফাইলস বানানো উচিত বলে মনে করেন শচীন্দ্রনাথবাবুও। তিনি বলেন, 'আমরা বেঙ্গল ফাইলস প্রমোট করব। বাংলার হিন্দুদের বেহাল দশা জানতে হবে। শরণার্থীদের ওপর অত্য়াচারের কাহিনী আগামী প্রজন্মের জানা উচিত।' ভিএইচপির মিডিয়া ইনচার্জ সৌরীশ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'মুখ্য়মন্ত্রী কি সিনেমাটা নিজে দেখেছেন? না দেখে কি করে এমন স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।'
আরও পড়ুন- মমতাকে ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পরিচালকের, ‘বেঙ্গল ফাইলস’ নিয়ে কী দাবি?
২ মার্চ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী তৃণমূল প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে। সংখ্য়ালঘু ভোট ব্য়াংক কি তৃণমূল হারাতে চলেছে? সেই প্রশ্ন ওঠে রাজনৈতিক মহলে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কেরালা স্টোরি নিষিদ্ধ করার পিছনে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক ধরে রাখার মরিয়া প্রচেষ্টা দেখতে পাচ্ছে।