থানার দ্বারস্থ হওয়ার পর বিডিও অফিসে গিয়েছেন বাদাম বিক্রেতা গায়ক। ভুবন বাদ্যকার কপিরাইটের জন্য লিখিত ভাবে আবেদন করেছেন দুবরাজপুরের জয়েন্ট বিডিওর কাছে। ভূবনবাবুর কথায়, 'বিডিও বলেছেন তোমার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। আমিও লিখিত দিলাম। কপিরাইটের জন্য বিডিওর কাছে আবেদন করেছি।' 'সেলিব্রেটি' হওয়ার পর থেকে ভূবনের বাদাম বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে কাঁচা বাদাম খ্যাত গায়ক বলেন, 'বাদাম আর বিক্রি হবে বলে মনে হচ্ছে না। এবার গানের দিকেই মন দেব। গান লিখবো।'
কাঁচা বাদামের গানের খ্যাতি কেমন লাগছে? সহাস্য জবাব ভুবনের, 'আমার খুব ভাল লাগছে। আমি জানতাম না গানে এতো আনন্দ পাওয়া যায়। আমি কল্পনা করতে পারিনি। ঈশ্বরের কৃপা হয়েছে। ঈশ্বর আমার মাথার ওপরে এসেছে। সবাই হয় তো আশীর্বাদ করেছে। তা নাহলে এসব জিনিষ কারও ভাগ্যে জোটে না।'
বাদাম বিক্রির কি হবে? ভূবনে বলেন, 'বাদাম কী করে বিক্রি করব? ওটাই তো আর হচ্ছে না। বাদাম আর কী বিক্রি হবে বলে মনে হচ্ছে?' তাহলে সংসার কি করে চলছে? তিনি বলেন, 'ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বাদাম বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন আর বাদাম বিক্রি হবে না। লোকks গান শোনাতে শোনাতে সময় কেটে যাবে। এখন কি করি! সোশাল মিডিয়ার বা ইউটিউবাররা আসছে সেখান থেকে কিছু রোজগার হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- টাকা কামাচ্ছে ইউটিউবাররা, তাঁর পকেট ফাঁকা, থানায় গেলেন ‘কাঁচা বাদাম’ গানের স্রষ্টা
দিনের আলো ফুটতেই বীরভূমের কড়ালজুড়ি গ্রামে বাদামওয়ালার বাড়িতে লোকের ভিড় বাড়ছে। ইউটিউবাররা হাজির হয়ে যাচ্ছেন। অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁকে বাড়িতে এসে সংবর্ধনা দিচ্ছেন। কেউ বা তাঁর হাতে বাদ্য যন্ত্র তুলে দিচ্ছেন। কড়ালজুড়ি গ্রামে এখন হইহই ব্যাপার। গান নিয়ে কি পরিকল্পনা আপনার? বাদামওয়ালার বক্তব্য, 'সকাল থেকেই বাড়িতে হাজির হয়ে যাচ্ছেন অনেকে। সময় পাচ্ছি না গান লেখার। ইচ্ছে আছে গান লেখা ও গান করার।'
বীরভূমের কড়ালজুড়ির বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর ভুবন বাদ্যকার গত ১০-১২ বছর ধরে বাদাম বিক্রি করছেন। স্থানীয় হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তিও হয়েছিলেন। নানা কারণে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার পর আর পড়াশুনো এগোয়নি। ভূবন জানিয়েছেন, এর আগে তিনি মুনিশ খাটতেন। সংসারে স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তবে অভাবের সংসারেও তাঁকে কিছু সাহায্য করতে হয় বলে জানিয়ে দেন ভূবন। ঝাড়খন্ড, বর্ধমান, ভীরভূমে ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করতেন গায়ক বাদাম ওয়ালা। বাদাম বিক্রি করতে করতে ভূবনের গান শোনার মজা নেওয়া আর হয়তো হবে না ক্রেতাদের।
রাস্তায় ভুবনবাবুকে দেখলেই গান শুনতে চাইছে সাধারণ মানুষ। সেই আব্দার মেটাচ্ছেনও তিনি। তাঁর কথায়, 'সবাই ধরুন গানটা শুনতে চাইছে। আমার 'ফেমাস' গান সবাই শুনতে চাইছে। গান না করলে আমারও খারাপ লাগছে। গানই করতে চাইছি। লোকে বলছে আপনি এত বড় 'সেলিব্রেটি' হয়েছেন। 'সেলিব্রেটি' মানে তো আমি জানি না। মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। একবার মাথা ঘুরে পড়েও গিয়েছিলাম।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন