বাঁকুড়ার এই পাহাড়ের গুহা নিয়ে বিতর্কে তোলপাড় হয়েছে। বাঁকুড়ার পোড়া পাহাড়ের গুহাই এখন পর্যটকদের নয়া আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। মুকুটমনিপুরে কংসাবতীর জলাধার দর্শনের সঙ্গে উপড়ি পাওনা এই পোড়া পাহাড়ের গুহা। সহজেই উঠতে পারবেন এই পাহাড়ের চূড়ায়। সেখান থেকে চারিপাশের মনোরম দৃশ্য চাক্ষুসও করা যায়।
সম্প্রতি বাঁকুড়ার খাতড়ার পোড়া পাহাড়ের গুহা নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠ। একদিকে এই গুহাকে আদিম মানুষের বাসস্থান বলে নয়া আবিস্কারের কথা বলেন। অন্যদিকে এই পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী গ্রামের বেশ কয়েকজন প্রবীণ মানুষের দাবি, এই গুহা খননের সময় তাঁরা সেখানে কাজ করেছেন। অর্থাৎ খনন করতে গিয়ে তৈরি হয়েছে গুহা। গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ উদ্ধারের জন্য সরকারের তরফে ড্রিল মেশিনের সাহায্যে এই পাহাড় খনন করা হয়েছে বলেই তাঁদের দাবি। দাবি পাল্টা দাবি যাই হোক না কেন শীতে ভ্রমণের মরসুমে জঙ্গলমহলের এই পাহাড়ের গুহা বেশ আকর্ষণীয় বলে দাবি পর্যটকদের। পর্যটকরা ভিড়ও করছেন।
দামোদরপুরের এই পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা। পাহাড়ের উঠে মাঝ বরাবর এই গুহা রয়েছে। ওপরে ওঠার সময় বেশ একটা থ্রিলিং থ্রিলিং ভাবও অনুভূত হবে। জঙ্গলের মাঝে মানুষ যাতায়াত করতে করতে রাস্তার সরু রেখাও তৈরি হয়েছে। গ্রামবাসীদের কেউ কেউ সেই জঙ্গলে জ্বালানী কাঠও সংগ্রহ করতে যায়। এই গুহাটির দুটি মুখ। একদিক থেকে ভিতরে ঢুকে অন্য দিকে বের হওয়া যায়। ভিতরটা ঘুট ঘুটে অন্ধকার। মোবাইলের আলো জ্বালিয়েই মানুষজন সেখানে প্রবেশ করছে। গুহার বাঁদিকে কিছুটা গিয়ে মুখগহ্বর বন্ধ। গুহার ভিতরে ৬টা আলাদ খোপ রয়েছে। গুহার ডান দিক থেকে ফের বাইরে বের হওয়া যায়। গুহাটি ভিতরে প্রায় ২০০ ফুটের ওপর লম্বা। দামোদরপুরের প্রবীণ বাসিন্দা কৃষ্ণপদ বাস্কে বলেন, 'খননের সময় এখানে চৌকিদারের কাজ করেছি। আদিম মানুষ থাকার কথা জানা নেই। পর্যটকরা নিয়মিত আসছেন।'
গুহা দেখে নীচে নামার সময় দেখা হল ডাক্তারী ছাত্র শুভময় দাস ও সুনম মন্ডলের সঙ্গে। দুজনের বাড়িই খাতড়ায়। কিন্তু তাঁরা কিছু দিন আগে জেনেছেন পোড়া পাহাড়ে গুহা আছে। শুভময় ও সুনম বলেন, 'গুহা দেখলাম। ভিতরে দুদিকে দুটো রাস্তা। একদিক বন্ধ, আরেক দিক খোলা। আমরা পুজোর সময় জানতে পারলাম গুহার কথা। এই প্রথমবার এলাম। গুহা পর্যন্ত উঠতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগল। বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে করতে যেতেই ভাল লাগল। শুনেছি মাইনিং করতে গিয়ে গুহাটি সৃষ্টি হয়েছে।' স্থানীয় টোটোচালক নৃপেন মাহাত বলেন, 'গুহাটা আমিও আজ প্রথম দেখলাম। উঠতে বেশ মজা লাগল। পর্যটকরা এলে স্থানীয়দের রুজি রোজগারও বাড়বে।' মেদিনীপুরের রাজু সাহা, সৌমুমী সাহারা পাহাড়ে উঠে গুহা দেখে রোমাঞ্চিত।
<আরও পড়ুন- নির্জন সমুদ্রে লাল কাঁকড়ার সমাহার, এতল্লাট কলকাতার খুব কাছেই>