কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের সাম্প্রতিক বিশ্বভারতীর ব়্যাঙ্কিং নিয়ে বিষ্ফোরক মন্তব্য করলেন প্রাক্তন সাংসদ ও বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। তৃণমূল কংগ্রেসের বহিরাগত শব্দ তাঁর মুখেও। প্রাক্তন ছাত্র ও অধ্যাপকের দাবি, 'বহিরাগত উপাচার্য বিশ্বভারতীর আবেগ বুঝতে পারছেন না। জমি জরিপে নজর থাকলেও শিক্ষার মানোয়ন্ননে কোনও নজর নেই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর।' যদিও অনুপমের বক্তব্য নিয়ে উপাচার্যের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রকাশিত ব়্যাঙ্কিংয়ে দেখা যাচ্ছে ৯৭ নম্বরে রয়েছে বিশ্বভারতী। এক দশক আগেও তা ছিল ১১ নম্বরে। ২০২২-এ ছিল ৯৮ নম্বরে। ২০২০-এ ৫০ নম্বরে ছিল বিশ্বভারতীর ব়্যাঙ্কিং। শুক্রবার বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ ও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'বিশ্বভারতীতে আমরা পড়াশোনা করেছি। যে বিশ্ববিদ্যালয় একদশক আগেও ১১ নম্বরে ছিল সে নেমেছে ৯৭ নম্বরে। শিক্ষার গুণগত মান বাদ দিয়ে জমি জরিপ করতে ব্যস্ত কর্তৃপক্ষ। ওই প্রচেষ্টাই যদি বিশ্বভারতীর শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য দিত তাহলে হয়তো বিশ্বভারতীর এই ব়্যাঙ্কিং হত না। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফোকাস থাকা উচিত শিক্ষার মান। সেই জায়গায় কোথায় বসন্ত উৎসব বন্ধ করতে হবে, কোথায় পৌষ মেলা বন্ধ করতে হবে, কোথায় বিশ্বভারতীতে বাউন্ডারি দিতে হবে, এগুলো কিন্তু শিক্ষার গুণমানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়। অথচ বিশ্বভারতীর আশ্রমিক যাঁরা গোড়া থেকে বিশ্বভারতীকে দেখছেন তাঁদের পরামর্শকে কখনও গ্রাহ্য করা হয় না। তাঁদের ও প্রাক্তনীদের কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে।'
আরও পড়ুন- বাঙালি কন্যের এযেন অসাধ্য সাধন! অভাবনীয় কৃতিত্বকে সেরার সেরা কুর্ণিশ ‘জগৎশ্রেষ্ঠ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিজেপির বিরুদ্ধে অন্যতম স্লোগান ছিল বহিরাগত। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের বহিরাগত বাণে বিদ্ধ করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। এদিন বহিরাগত সুর শোনা গেল অনুপমের গলায়। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক বলেন, 'এমন বহিরাগত উপাচার্য এককথায় বিশ্বভারতীর আবেগ বোঝেন না। তাছাড়া বিশ্বভারতীর তহবিল শেষ হচ্ছে মামলা লড়তে গিয়ে। তাতে হেরেও যাচ্ছেন। ফান্ডের অপচয় হচ্ছে। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্বভারতীর সবই নেগেটিভ খবর। প্রাক্তনী ছাত্র ও অধ্যাপক বা প্রাক্তন সাংসদ হিসেবে খুব খারাপ লাগে।'
বিশ্বভারতীর আচার্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুপমের বক্তব্য, 'যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদীজির নাম জড়িত সেখানে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের উচিত আরও সতর্ক হয়ে শিক্ষার গুণগত মানের ওপর জোর দেওয়া। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তো নরেন্দ্র মোদী নন।' এদিকে উপাচার্যকে ফোনের পাশাপাশি হোয়াটস অ্যাপ ও এসএমএস করা হয়েছিল। কিন্তু এবিষয়ে কোনও জবাব মেলেনি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কাছ থেকে।