/indian-express-bangla/media/media_files/2025/04/14/3IsbgX5qyHPpqm96k0Mw.jpg)
Murshidabad Violence: মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী।
Murshidabad Violence: ওয়াকক সংশোধনী আইন (Waqf Amendment Act) প্রত্যাহারের দাবিতে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে মুর্শিদাবাদে। জঙ্গিপুর থেকে শুরু হওয়া অশান্তি ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে সুতি, সামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ানের মতো এলাকায়। কলকাতা হাইকোর্ট মুর্শিদাবাদে অশান্তি থামাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশ পেয়েই পুরোদমে কাজ শুরু সেন্ট্রাল ফোর্সের। আধাসেনাকে সব রকম সহযোগিতা রাজ্য পুলিশেরও।
শুরুটা হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবি দিয়ে। পরে এই বিক্ষোভ রূপ নেয় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের। হিংসার আগুন জ্বলে ওঠে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে। বেপরোয়াভাবে বাড়ি,দোকানে চলে ভাঙচুর-আগুন। বেসরকারি সম্পত্তির পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তিতেও ব্যাপক ভাঙচুর চলে। বাড়ি-ঘর দোকানে অবাধে লুঠতরাজের অভিযোগ উঠেছে জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জ, সুতি, ধুলিয়ানে।
মুর্শিদাবাদে এই অশান্তির জেরে ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে তিনজনের। সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলেকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ধুলিয়ানেও এক যুবকের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রাণভয়ে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়েছে বহু পরিবার। নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছে। ঘরছাড়া পরিবারগুলিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে রুট মার্চ শুরু করেছে। দিকে দিকে চলছে টহলদারি। মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে আধা সেনা এবং পুলিশ।
রবিবার দিনভর মুর্শিদাবাদে স্পর্শকাতর বেশ কিছু এলাকা নিজে ঘুরে দেখেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। গতকালই জেলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বলে দাবি করেছিলেন রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তা। কাল আরও একবার সাধারণ মানুষকে তিনি গুজবে কান না দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। যে কোনও ধরনের সমস্যায় পড়লে দ্রুত পুলিশকে খবর দেওয়ার কথা জানান ডিজি।
ADG দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার বলেন, "সামশেরগঞ্জ-সহ অন্যত্র পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গত ৩৬ ঘণ্টায় নতুন করে কোথাও কোনও অশান্তির খবর নেই। এখনও পর্যন্ত দু'শোর বেশি গ্রেফতার হয়েছে। ঘরছাড়াদের মধ্যে ১৯ জন গতকালই ফিরে এসেছে। তাঁরা এখনও নিরাপদে আছে। আরও শতাধিক মানুষ শীঘ্রই আজ-কালের মধ্যে ফিরে আসবে। সেখানে CRPF ও রাজ্য পুলিশের ক্যাম্প রয়েছে। পুলিশ, CRPF, BSF-এর ক্যাম্প আছে। ধীরে ধীরে দোকান-বাজারও খুলে যাচ্ছে। রুটমার্চ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা আশাবাদী খুব দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।"
অন্যদিকে BSF-এর এডিজি রবি গান্ধী বলেন, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা পুলিশের সঙ্গে মিলে কাজ করছি। এটা সীমান্তবর্তী জেলা, এমনিতেই এখানে নজরদারি থাকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। আমরা পুলিশের সঙ্গে সবরকমভাবে যোগাযোগ রেখে কাজ করে চলেছি। সীমান্তেও সমানতালে সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে।"
এদিকে, প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে অশান্তি মোকাবিলার জন্য ১৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সুতি থানা এলাকায় তিন কোম্পানি, সামশেরগঞ্জ এবং ধুলিয়ানে ৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। মাইকিং করে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারেও জেলা প্রশাসন চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর।