'খুনের মামলা নয়, এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন কী করে?', আনিস-মৃত্যু শুনানিতে রাজ্যকে প্রশ্ন হাইকোর্টের। ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে এদিন পুলিশি গাফিলতি মেনেছে রাজ্য। তবে খুন বা আত্মহত্যা নয়, ছাদ থেকে পড়ে গিয়েই আনিস খানের মৃত্যু হয়েছিল বলে হাইকোর্টে সওয়াল রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের। তাই এক্ষেত্রে খুনের মামলা ৩০২ প্রযোজন্য নয় বলেই মত এজি-র। যদিও আগে থেকে এব্যাপারে নিজেদের মতামত জানানোয় রাজ্যকে তুলোধনা হাইকোর্টের।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু নিয়ে উত্তাল হয় গোটা রাজ্য। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার আমতায় আনিস খানের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। তল্লাশি অভিযান চালাতে রাতে আনিসের বাড়িতে পুলিশ ও কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে ওই রাতেই মৃত্যু হয় আনিসের। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশই আনিসকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দিয়ে খুন করেছে। যদিও পুলিশের দাবি, আনিসই তাঁদের দেখে ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে।
পরবর্তী সময়ে আনিস-মৃত্যু নিয়ে রাজ্য পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে সোচ্চার হয় তাঁর পরিবার থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। কলকাতার রাস্তায় দিনের পর দিন আনিস-মৃত্যুর প্রতিবাদে মিছিল, ধর্না চালিয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্রছাত্রীরা। পুলিশও আনিস-মৃত্যুর তদন্তও চালিয়ে গিয়েছে। শেষমেশ সেই তদন্তের নির্যাস আজই জমা পড়ল কলকাতা হাইকোর্টে।
আরও পড়ুন- ‘PWD-র এত খাই কেন?’, ভরা বৈঠকে তুলোধনা মমতার
রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এদিন আনিস-মৃত্যুতে পুলিশি গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি এদিন আদালতে জানিয়েছেন, পুলিশ নিয়ম মেনে আভিযানে যায়নি। তবে পুলিশ আনিসকে মারার চক্রান্ত করেও সেখানে যায়নি। ছাদ থেকে পড়েই মৃত্যু হয়েছে আনিসের। ছাত্রনেতার প্রথম ও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ফারাক নেই বলেও আদালতে সওয়াল এজির।
আদালতে এদিন এজি আরও জানিয়েছেন, আনিস মৃত্যুর তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনও পরীক্ষা করা হয়েছে। চক্রান্তের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলেই দাবি তাঁর। এক্ষেত্রে তাই খুনের মামলা ৩০২ ধারা প্রযোজ্য নয় বলে আদালতে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। এজি-র এই সওয়ালে বেজায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আদালত। রাজ্যকে তুলোধনা করে বিচারপতি বলেন, ''খুনের মামলা হবে না, এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন কী করে? সিঁড়ি দিয়ে দুই পুলিশকর্মী ওঠার পর কী হল রিপোর্টে তা স্পষ্ট নয়।''