BJP: দিঘার নয়া জগন্নাথ ধামে মমতা-দিলীপ সাক্ষাৎ বঙ্গ বিজেপিতে রীতিমতো তুফান নিয়ে এসেছিল। সেই কোন্দল সময়ের তালে অনেকটা তিথিয়ে গিয়েছে। কিন্তু BJP রাজনীতিতে দিলীপ বিরোধী মুখ আরও স্পষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গ রাজনীতিতে এই জল্পনা এখনও অব্যাহত তাহলে সত্যি কি দিলীপ ঘোষ বিজেপি ছাড়ছেন, তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? যদিও প্রতিবারই এই প্রশ্ন ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। তবে রাজ্য বিজেপি যে আপাতত দুই শিবিরে বিভক্ত তা পরিস্কার হয়ে গিয়েছে।
দিঘার জগন্নাথ ধামে দিলীপ ঘোষের যাওয়া নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দল অনুমোদন করে না বলে তিনি জানিয়ে ছিলেন। একাধিক শীর্ষ নেতা ভয়ঙ্কর আক্রমণ করেছেন রাজ্য বিজেপির সফল সভাপতিকে। তাঁর সভাপতিত্বের আমলেই যে এরাজ্যে বিজেপির উত্থান হয়েছে। এদিকে দিলীপ ঘোষ বলছেন, তিন বছর পার্টির কর্মসূচিতে তিনি ছিলেন না। গত ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তিনি বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে বিজেপির লোকসভা প্রার্থী হয়েছিলেন। বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। তখনই দলের অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠেছিল জেতা আসন থেকে হারানোর লক্ষ্যেই কি দিলীপ ঘোষকে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল? দিলীপ ঘোষকেও দলের ওই সিদ্ধান্তকে হজম করতে হয়েছিল তা তাঁর এখনকার বক্তব্যে আরও পরিস্কার।
সামনেই বিধাসভা ভোট হাতছানি দিচ্ছে। মাঝে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বাংলায় আসার কথা ছিল। তাও বাতিল করা হয়েছে। দিল্লি থেকে নেতৃত্ব এখানে না এলে বঙ্গ বিজেপি ঠিক যেন চাঙ্গা হতে পারে না। এদিকে নয়া রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়া ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে দিলীপ বিতর্কে ঝড় বয়ে গেলে বিজেপিতে। বিজেপির এই দলাদলিতে তৃণমূল কংগ্রেস আদৌ ফায়দা তুলতে পারবে কিনা সেটা সময়ই বলবে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস যে দিলীপ ঘোষকে ভাঙাতে তৎপর তা তৃণমূলের নানা স্তরেই বক্তব্যই জানান দিচ্ছে। নিদেন পক্ষে বিজেপির সংগঠনে অস্থিরতা তৈরি করা। তাতে অবশ্য সফল মমতা। এই রাজ্যে বিজেপি সম্পূর্ণ হিন্দুত্বের ওপর ভরসা করে বিধানসভা জিততে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সেক্ষেত্রে দলের কোনও এক নেতার অবস্থান বদলালেও কিছু যায় আসে না বলেই মনে করছে বিজেপির বড় অংশ।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Updates: রাজ্যে ফের এক বড়সড় দুর্নীতির পর্দা-ফাঁস শীঘ্রই? কলকাতার দিকে দিকে অভিযানে ED
দিলীপ ঘোষের পর রাজ্য বিজেপির নতুন কমিটিতে অনেক পুরনো নেতাই স্থান পায়নি। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে যেমন অবস্থা হয়েছিল বিজেপির আদি নেতৃত্বের। তৃণমূলের থেকে আমদানি হওয়া অধিকাংশ নেতৃত্বই পদ্ম প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন। কান্নার রোল পড়েছিল আদি বিজেপির নেতৃত্বের একাংশে। তারপর নতুন কমিটি গঠনের পর আরেক দফা পুরনোদের সেখানে স্থান দেওয়া হয়নি। তাঁদের এখনও পার্টির কোনও অনুষ্ঠানে দেখা যায় না। তাঁরা যে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে, তাও নয়। এদের অনেকের সঙ্গেই দিলীপ ঘোষের বেশ ভাল সম্পর্ক। জেলায় জেলায় অনেক নেতা-কর্মী এখনও বসে রয়েছেন। দলের এই অংশ আগামী বিধানসভার আগে কি অবস্থান নেয় সেটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: মুর্শিদাবাদের দাঙ্গায় 'বাম আমল' টানলেন মুখ্যমন্ত্রী, নিহত জওয়ানের স্ত্রীকে সরকারি চাকরি
দিলীপ ঘোষ দিঘার জগন্নাথ ধামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিজেপির ঘরোয়া কোন্দল প্রকাশ্যে আসায় তৃণমূল কংগ্রেস তার ফল পেতে মরিয়া। বিষয়টা আরও উসকে দিতে তৃণমূল নেতা ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণের সময় ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের আবার বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতাকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে উপহার পাঠিয়েছিলেন বিয়ের দিন। রাজ্য বিজেপির কোনও নেতার অন্য কোনও অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন তা খুব একটা শোনা যায়নি। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, জগন্নাথ ধামে যাওয়ার সেতু কি সেদিনই তৈরি হয়েছিল? দিলীপ ঘোষ বলেই দিয়েছেন সাপের গর্তে কার্বোলিক অ্যাসিড দিয়েছেন। দলে কি প্রতিক্রিয়া হবে তা জেনে বুঝেই সেদিন দিঘা গিয়েছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের কোনও সন্দেহ নেই।