অপা-র বাড়ির গেট থেকে এসএসসি দুর্নীতি, কয়লা থেকে গরু পাচারের দৃশ্য, ইডির গাড়ি, এমনকী প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 'উপস্থিতি'ও আছে বিজেপির 'দুর্নীতির দেওয়াল' প্রদর্শনীতে। রাজ্যের সামগ্রিক দুর্নীতি ও অস্থিরতার দৃশ্যপট তুলে ধরা হয়েছে এই দেওয়ালে। এই দুর্নীতির দেওয়াল পেরিয়ে ঢুকতে হবে বিজেপি আয়োজিত দুর্গাপুজোর মণ্ডপে। বাংলাকে 'দুর্দশামুক্ত' করতেই এই অভিনব উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগের বছর করোনা আবহেও মহা ধুমধামে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিল বঙ্গ বিজেপি। সে হইহই ব্যাপার। ধুতি পড়ে হাজির হয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ছিলেন মুকুল রায় থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা। এঁদের প্রথম দু'জন এখন শিবির পাল্টে তৃণমূলে ভিড়েছেন, কৈলাস বিজয়বর্গীয়তো এরাজ্যটাকে ভুলেই গিয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনের পর বাংলায় আর পা রাখেননি বিজয়বর্গীয়। শনিবার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল।
আরও পড়ুন- সপ্তমী ভেস্তে দিতে আসরে অসুর বৃষ্টি, পুজোর বাকি দিনগুলিতেও ভোগাবেন বরুণদেব?
এবার বঙ্গ বিজেপির দুর্গাপুজোতে প্রদর্শনীর মাধ্যমে সরাসরি রাজ্যের জ্বলন্ত ইস্যু তুলে ধরা হয়েছে। অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, 'প্রদর্শনীতে ছবি, পেপারকাটিং, মডেল রয়েছে। মায়ের কাছে আবেদন করেছি আমাদের রাজ্যকে দুর্দশামুক্ত করতে। দুর্নীতির দেওয়াল থেকে আমাদের মুক্তি কর মা। রাজ্যের মানুষকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের মধ্যে কাটাতে হচ্ছে। দুর্নীতির দেওয়াল থেকে ভিতরে গিয়ে মাকে বলছি রাজ্যটাকে রক্ষা করতে।'
কেশপুরের বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন শিক্ষক প্রীতিশরঞ্জন কোনার। নির্বাচনের দিন তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। মণ্ডপে দাঁড়িয়ে প্রীতিশরঞ্জন কোনার বলেন, 'দুর্গাপুজো মানে অসুরের দমন অর্থাৎ দুষ্টের দমন সৃষ্টের পালন। যাঁরা দুর্নীতি করছে সন্ত্রাস করছে তাঁদের বার্তা দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। তাঁরাও একধরনের অসুর। দুর্নীতিমুক্ত শাসন দেখতে মায়ের আরাধনা করা হচ্ছে। আমি নিজেও নির্বাচনের সময় সন্ত্রাসের শিকার হয়েছি, আমি ও আমার সঙ্গীদের জীবন সংশয় হয়েছিল।' শিক্ষক নেতা দীপল বিশ্বাস বলেন, 'এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে প্যানেলে নাম উঠলেও চাকরি পাননি। মানব সম্পদ রাস্তায় বসে রয়েছে। পরীক্ষা না দিয়ে চাকরি করছে। এসবই রয়েছে প্রদর্শনীতে।'
আগমী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যে নবান্ন অভিযান করেছে বিজেপি। দুর্গাপুজোকেও সরাসরি রাজনৈতিক কর্মসূচির বাইরে রাখল না বিজেপি। মূলত দুর্নীতির ইস্যুকে তাজা রেখে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ শারদ উৎসবকে বেছে নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি।