রেলের নিত্যযাত্রীদের সমস্যা বিবেচনা করে সকাল ও বিকেলে লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য এবার রাজ্যই চিঠি দিল রেলকে। চিঠিতে বলা হয়েছে, লোকাল ট্রেন চালুর ক্ষেত্রে কঠোর ভাবে শারীরিক দূরত্ব সহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে । তবেই লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে রাজ্য তাদের অনুমতি দেবে। বিধি মেনে লোকাল ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে 'মেট্রো মডেল' অনুসরণ করা যেতে পারে বলে মত নবান্নের।
প্রতিদিন কয়েক জোড়া বিশেষ লোকাল ট্রেন চালানোর প্রস্তাবের বিষয়ে রেলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়ে শনিবার রাতেই পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মাকে রাজ্য সরকারের তরফে চিঠি দিয়েছেন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এইচ কে দ্বিবেদী। পরে, স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে টুইট করে সেই খবর জানানো হয়।
নিউ নর্মালে পরিষেবা শুরুর বিষয়ে আগেই রাজ্যকে চিঠি দিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল রেল। কিন্তু, আনলক পর্বে ট্রেন চালানোয় সায় ছিল না রাজ্য সরকারের। ফলে, রেল রাজ্যের জবাব পায়নি। লোকাল ট্রেন চালুর বিষয়টিও আর এগোয়নি।
রেলকে দেওয়া চিঠিতে রাজ্যের অতিরিক্ত স্বরাষ্ট্রসচিব লেখেন যে, এর আগে মেট্রো পরিষেবা যথেষ্ট সতর্কতা ও দক্ষতার সঙ্গে চালু করতে সক্ষম হয়েছে রাজ্য। এবার রেলের সম্মতি মিললে বিশেষ কয়েক জোড়া ট্রেনও ভালো ভাবেই চলতে পারবে এ রাজ্যে। তাতে জনসাধারণেরও অনেক সুবিধা হবে। পাশাপাশি শনিবার হাওড়া স্টেশনে আরপিএফের হাতে নিগৃহীত হতে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। চিঠিতে এ ব্যাপারে নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে রাজ্যের তরফ থেকে। এই ঘটনা ‘দুঃখজনক’ বলে জানিয়েছে রাজ্য। যাত্রীর প্রতি রেল পুলিশের ভূমিকাকেও 'অমানবিক' বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে উঠতে দিতে হবে! যাত্রী বিক্ষোভে ধুন্ধুমার কাণ্ড হাওড়া স্টেশনে
চিঠিতে উষ্মা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বর্তমানে রেল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদেরই স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য সরকারি কর্মচারী এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রাজ্যে গণপরিবহণের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাধ্যম চালু হয়ে গিয়েছে। চালু হয়েছে বিমান পরিষেবাও। কিন্তু রেল শুধু তাদের কর্মীদের জন্যই পরিষেবা দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবারের পর শনিবারেও হাওড়া স্টেশনে যাত্রী বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে উঠতে না দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে যাত্রীরা। এ দিনও স্টেশনে ঢোকার মুখেই আটকে দেওয়া হয় যাত্রীদের। বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টেশনে ঢোকার গেট। ব্যারিকেড করে যাত্রীদের আটকানোর চেষ্টা করে রেল পুলিশ। এরপরই পুলিশের ব্যারিকেড টপকে জোর করে স্টেশনে ঢুকতে গেলে জিআরপি ও আরপিএফ কর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে যাত্রীদের। ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। রেল পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয়। যাত্রীদের অভিযোগ, বিক্ষোভের সময় রেল পুলিশ মারধর করেছে। এই ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সকাল-বিকেলে কয়েক জোড়া লোকাল ট্রেন চালুর আর্জি জানিয়ে রেলকে চিঠি দেয় রাজ্য।
নবান্নের আর্জিতে রাজি হয়ে রেল এখন আলোচনায় বসে কিনা সেদিকেই নজর ট্রেন যাত্রীদের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন