'বেঙ্গল বিজনেস কনক্লেভে'র সমাপ্তি অনুষ্ঠান থেকে একই সঙ্গে বিনিয়োগকারী, শিল্পপতি এবং মোদীকে বিশেষ বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা দেশ যখন অর্থনৈতিক মন্দায় ধুঁকছে, তারই মাঝে শিল্পক্ষেত্রে আশার আলো জ্বেলেছে বাংলা, শিল্প সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার এমনটাই জানালেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমো এদিন বলেন, "হ্যান্ডলুম, খাদি, চর্ম শিল্পে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বাংলা। আমরা ক্ষমতায় আসার পর, খাদি শিল্প ৩০ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই মুহুর্তে সরকার গ্রামের তাঁতিদের আরও উন্নতি করতে বদ্ধপরিকর। ত্রাণের ক্ষেত্রে শাড়ি, বিছানার চাদর ইত্যাদি আমরা আমাদের তাঁতিদের ঘর থেকেই নেব তন্তুজের মাধ্যমে। ২০ হাজার তাঁতিরা তিন বছর ধরে সাহায্য পাবেন। এখনই তৈরি করতে হবে এই প্রকল্প। স্বাভাবিকভাবেই এই প্রকল্প রূপায়ণ করা হলে তা আমাদের বাজারকে আরও উজ্জীবিত করে তুলতে সক্ষম হবে। এমনকী বেকারত্ব কমাতেও সাহায্য করবে।"
আরও পড়ুন: কলকাতায় বিজেপি কার্যালয়ের সামনে ধুন্ধুমার, তুমুল ধস্তাধস্তি
শিল্প সম্মেলনের এই মঞ্চ থেকেই আবার এনআরসি বিরোধিতায় সরব হয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করে মমতা বলেন, "মাঝে মাঝে কিছু সমস্যা হয়। কিন্তু তা মিটিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু প্রতিদিন যদি কেউ বলে বেরিয়ে যান, বেরিয়ে যান, বেরিয়ে যান এবং ব্যবসার সব রাস্তা বন্ধ করে দেয়, তাহলে সেই সমস্যা মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। সেটা আমরা চাই না।" কয়লা শিল্প এবং বিদ্যুৎ বণ্টনের ক্ষেত্রে বাংলাই আলো জ্বালবে দেশে, এমন মন্তব্যও করেন মমতা। তিনি বলেন, "কয়লা খনি ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে আগামী একশ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ বণ্টনে আর কোনও সমস্যা থাকবে না। কয়লা পশ্চিমবঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আগের সরকারকে লোডশেডিং সরকার নামে ডাকা হত, অথচ গত আট বছরে কোনও লোডশেডিং সমস্যা হয়নি।"
আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত মিমি-দেব, সাফাই নুসরতের
তবে শুধু বিদ্যুৎ নয়, ব্যবসাতেও দেশের মধ্যে এগিয়ে বাংলা, বৃহস্পতিবার এমন দাবিই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "সারা বিশ্বে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, কারণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। দেশের অবস্থাও একই রকম। কিন্তু বাংলায় তা নেই। এর একমাত্র কারণ, আমরা এই ক্ষুদ্র শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। সেই কারণে প্রায় ৩ কোটি কর্মসংস্থান করা সম্ভব হয়েছে। ৪০ শতাংশ কমেছে বেকারত্ব। আট বছরে পরিকল্পনা করে কাজ করাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। ৫২৮টি কর্মতীর্থ তৈরি করা হচ্ছে বিনামূল্যে। এতে ছোট ছোট ব্যবসাগুলিকে সবল করে তোলা যায়। আমরা ক্ষুদ্রশিল্পে এক নম্বর, কর্মসংস্থানে এক নম্বর, দারিদ্রদূরীকরণ, বাণিজ্যে আমরা এক নম্বর। বাংলা আরও এগিয়ে যাবে অদূর ভবিষ্যতে। বিশ্বকে পথ দেখাবে বাংলাই। ২ মিলিয়ন ডিপোসিট করা হয়েছে কয়লা খনিতে। তাজপুর পোর্টকে আরও উন্নত করা হবে, যা অর্থনৈতিক চেহারা বদলে দেবে। আরও কর্মসংস্থান বাড়বে।"