"পে কমিশনের প্রথম পর্যায়ের রিপোর্ট পেয়েছি, পে কমিশন যা যা সুপারিশ করবে, তা আমরা মেনে নেব", নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মী সংগঠনের সভায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য এমন ঘোষণাই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, পয়লা জানুয়ারি থেকে নতুন পে কমিশন কার্যকর করার চেষ্টা করা হবে, এ ব্যাপারেও আশ্বাসবাণী শোনান মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্টেট পে কমিশন রিপোর্ট জমা দিলে ডিএ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মমতা বলেন, "আমি টাকা কমাব না। অনেক প্রসেডিউর আছে। ডিএ আর পে কমিশন সংযুক্তিকরণ হয়ে গেলে তো ভালোই। যখন বলেছি করব, সুপারিশ মানব, তখন ১লা জানুয়ারি থেকে চেষ্টা করব যত দ্রুত সম্ভব এই সুপারিশ কার্যকর করতে। ভরসা রাখুন।"
অন্যদিকে, নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে মমতা বলেন, " ভোটের আগে কেউ কেউ প্ররোচনা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যখন বর্ধিত হারে ডিএ দিচ্ছে , তখন আমরা পাচ্ছি না কেন? জেনে রাখুন, বাংলা ছাড়া কোনও জায়গায় পেনশন স্কিম নেই। আর কেন্দ্রে তো 'কন্ট্রিবিউটারি স্কিম'। স্টক মার্কেটে লাগিয়ে তারপর টাকা দেওয়া হয়। কর্মীদের স্বার্থে আমরা পেনশন তুলিনি। যদি তুলে দিতাম তাহলে আমার প্রায় অনেক টাকা বেঁচে যেত। আমার এতো ধার সত্বেও আমি চালিয়ে যাচ্ছি। মাসের এক তারিখে মাইনে থেকে শুরু করে হেলথ স্কিম, ছুটি সব দেওয়া হয়েছে। অনেকে অনেক কিছু নিয়ে খেলাতে চায়। আমি যেটুকু বলার সেটুকুই বলি। যেটা বলব সেটা করব। ভোটের সময় এক বলব, ভোটের পর হাওয়া হয়ে যাব, সেটায় আমি রাজি নই।"
আরও পড়ুন- কোথায় রাজীব কুমার? কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে তলবি নোটিস সিবিআইয়ের
এমনকি, এদিন ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ নিয়েও মুখ খোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। নাম না করেই মোদী সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, "এরপর দেখবেন আর ব্যাঙ্ক নেই,অ্যাপ ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। তারপর দেখবেন অ্যাপটাও উধাও হয়ে গেছে। এয়ার ইন্ডিয়া, রেল, বিএসএনেলের কর্মীরা আমার কাছে এসে কাঁদেন। সব বেসরকারি করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার"। উল্লেখ্য, নয়া সুপারিশের বেসিকে ২.৫৭ শতাংশ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে ৷ ন্যূনতম বেসিক হবে ১৭৯৯০ টাকার ৷ ২৩ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলেই জানা গেছে।
আরও পড়ুন- পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে কাল-পরশু কালা দিবসের ডাক বাম ছাত্র-যুবদের
তবে রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয়বাবু বলেন, "এটা একটা হযবরল পে কমিশন ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই যা উনি আদালতের রায় মেনে নিয়েছেন। কিন্তু উনি আট বছরে ৯০% দিয়েছেন, ৯৩ নয়। উনি ভুল বলেছেন। ৩৫ শতাংশ দিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার। হিসেব করলে দেখা যায় ২০১৬ সালে ১২৫% পাওয়ার কথা সেটা হয়তো পাব ২০১৯ সালে। তবে আদৌও পাব কি না এ ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না"।