অবস্থান বিক্ষোভরত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভানেত্রী পৃথা বিশ্বাস সহ ছয় শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করল যাদবপুর থানার পুলিশ। সুত্রের খবর, এদিন দুপুরেই আদালতে তোলা হয় ধৃতদের। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বেতন কাঠামো নিয়ে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে এবার রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতে চলেছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, রাজ্যপালের কাছে সময় চেয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, বুধবার বিনা অনুমতিতে রাজা সুবোধ চন্দ্র রাজা সুবোধ চন্দ্র মল্লিক রোড আটকে প্রায় সাত ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভ করে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিস্ফলা বৈঠকও করেন তাঁরা। এরপর বিকেলেই পার্থ বলে দেন, এভাবে রাস্তায় বসে অবস্থান বিক্ষোভ করে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলছেন শিক্ষকরা। এটা খুবই নিন্দনীয়। রাস্তা থেকে অবস্থান তুলে নেওয়ার কড়া বার্তা দেন তিনি। এরপর সংবাদ মাধ্যমের সামনে পৃথাদেবী বলেন, 'আমাদের কোনো উপায় নেই, অবস্থান চলবে'। এরপর বাঘাযতীন এলাকার সি ব্লকের এক পার্কে অবস্থান সরিয়ে নিয়ে যান আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা। প্রাথমিক শিক্ষক শান্তনু মণ্ডল বলেন, রাত গড়াতেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করে প্রশাসন। বাঘাযতীনে অবস্থানরত প্রায় ১১৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর কড়া বার্তায় সাত ঘণ্টা পর রাস্তা থেকে সরল প্রাথমিক শিক্ষকদের অবস্থান
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা গড়াতেই যাদবপুর থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয় সংগঠনের সাত প্রতিনিধিকে। সেখানেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। নেত্রী পৃথা বিশ্বাস-সহ ছয় জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ দিন দুপুরে তাঁদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়। আপাতত অবস্থান স্থগিত রেখেছে শিক্ষক সংগঠনটি। তাঁরা চাইছে, গোটা ব্যাপারটা রাজভবনকে জানাতে।
আরও পড়ুন: পার্থর বাড়ি ঘেরাওয়ের চেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষকদের, পুলিশি প্রতিরোধে অবস্থান বিক্ষোভ
উল্লেখ্য, বুধবার বেতন বৈষম্য নিয়ে ফের রাজপথে নামে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। সটান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবন অভিযানের কর্মসূচী গ্রহণ করেন তাঁরা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত আর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি প্রতিবাদী শিক্ষকেরা। যাদবপুরের বাঘাযতীনেই পথ আটকে অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন তাঁরা। কিন্তু এতে ভীষণ সমস্যায় পড়েন পথ চলতি সাধারণ মানুষ। বাড়তে থাকে চাপ। এরপরই দ্রুত সমাধান সূত্র খুঁজতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর বাসভবনে আন্দোলনকারীদের তিন প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠান। কিন্তু বৈঠকে মেলেনি সমাধান সূত্র। এরপরই অবস্থান স্থানান্তরিত করেন আন্দোলনকারীরা।