বঙ্গ বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবিরে মন্ত্রী, সাংসদদের অনেককেই দেখা যায়নি। এরাজ্য থেকে সর্বভারতীয় স্তরে দু'জন পদে রয়েছেন। দিলীপ ঘোষ সর্বভারতীয় সহসভাপতি ও সম্পাদক পদে প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা। ওই শিবিরে না ডাকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন অনুপম হাজরা। কী কারণে তাঁকে ডাকা হয়নি সেকথা অনুপম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে খোলসা করেছেন।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির রাজ্য ও জেলা সংগঠন নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ চলছে প্রকাশ্য়েই। বহু জেলা পদাধিকারী পদত্যাগও করেছেন। বসেও গিয়েছে আদি বিজেপির একাংশ। সম্প্রতি রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে বিজেপি। সেখানে দলের সর্বভারতীয় সংগঠন সম্পাদক বিএল সন্তোষের মতো শীর্ষ পদাধিকারী হাজির ছিলেন। কিন্তু এই শিবিরে রাজ্য থেকে মনোনীত একমাত্র কেন্দ্রীয় সম্পাদককে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
অনুপম হাজরার বক্তব্য, 'আমি মাঝে-মধ্যে রাজ্য সংগঠনের ত্রুটি, বিচ্যুতি তুলে ধরি। বসে যাওয়া কার্যকর্তাদের পক্ষ নিয়ে সরবও হয়েছি। নিরপেক্ষে ভাবে সাংগঠনিক ত্রুটি-বিচ্যুতি যাতে ওই শিবিরে তুলে ধরতে না পারি তার জন্যই আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কারণ, সেখানে শীর্ষ নেতৃত্ব সরাসরি জানতে পারবে বঙ্গ বিজেপির রাজ্য ও জেলা স্তরে কোথায় গলদ আছে। তা আটকে দিতেই আমাকে মেসেজ, ফোনকল বা ইমেইল কোন কিছুর মাধ্যমেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।' তাঁর দাবি, 'মূলত দলের যে দু-একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁরাই ঘিরে রেখেছে শীর্ষ নেতৃত্বকে। তাঁরা চায় না শীর্ষ নেতৃত্ব বঙ্গ বিজেপির হাল-হকিকত জানুক। তাহলেই অনেকের সমস্যা হবে।' দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছেও তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন অনুপম।
রাজ্যে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব ও প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গরুপাচার কান্ডে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের গ্রেফতারের মতো ঘটনা ঘটেছে। তার আগে বীরভূমের বগটুইতে গণহত্যা, হাঁসখালিতে গণধর্ষণ, আনিস-হত্যার মতো একাধিক জ্বলন্ত ইস্যু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্য়ের সামগ্রিক ইস্যু নিয়ে সেভাবে রাজনীতির ময়দান কাঁপাতে সমর্থ হয়নি বিজেপি। দিন বদলে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি। তার আগে এই প্রশিক্ষণ শিবির অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক মহলের মতে, দলের অন্দরের কোন্দলের দরুন দলের একাংশ রাস্তায় নামছে না। অনেকে পদত্যাগ করে শীর্ষ নেতত্বকে বার্তা দিয়েছেন। এদিকে প্রশিক্ষণ শিবির নিয়েও ক্ষোভ-বিক্ষোভ অব্যাহত।