মেয়োরোডে 'শিক্ষক দিবস' পালন করলেন চাকরি প্রার্থী আন্দোলনকারীরা। প্রতীকী ক্লাসও নিলেন শিক্ষক চাকরি প্রার্থীরা। পুজোর আগেই নিয়োগের দাবি তুলেছেন তাঁরা। তবে নিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা সত্বেও স্বস্তিতে নেই চাকরি প্রার্থীরা।
প্রায়সই শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষক দিবসের দিন ৮৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কোনওভাবেই আশ্বস্ত হতে পারছেন না ৫৪০ দিন পথে বসে থাকা শিক্ষক চাকরি প্রার্থীরা। এদিন মেয়োরোডের অবস্থানেই ডেমো ক্লাস নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পরিবারের খুদেরা নাচ-গান-কবিতা পরিবেশন করেছেন। অবস্থানকারীদের আপশোষ শিক্ষক দিবসে যেখানে আমাদের স্কুলে থাকার কথা এখনও আমরা রাস্তার পাশে বসে আছি।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জেল হেফাজতে রয়েছেন। একের পর এক গ্রেফতারি চলছে। এরইমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নানা সভাতে শিক্ষক নিয়োগের কথা ঘোষণা করছেন। এদিনও তিনি নিয়োগের কথা বলেছেন। কিন্তু তাতে যে আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত পারছেন না তা স্পষ্ট করেছেন। শহীদুল্লাহ, শুভদীপ মান্নাদের কথায়, 'হাজার হাজার চাকরির কথা শুনে আশ্বস্ত হতে পারছি না। ৫৪০ দিন ধরে আছি সেটা যেন ৫৪১ না হয়, সেই কামনা করি। পুজোর আগে নিয়োগটা দিয়ে আমাদের বাড়ি ফেরানোর ব্য়বস্থা করুক। শুধু আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতিতে পেট ভরে না।'
শিক্ষক দিবসের দিন একেবারে স্কুলের পরিবেশ সৃষ্টি হল মেয়োরোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে। কচি-কাঁচারা নাচ করল, আবৃত্তি-গান পরিবেশন করল। শিক্ষক চাকরি প্রার্থীরা স্বরচিত কবিতা পাঠ করেছেন। মোদ্দা কথা স্কুলের শিক্ষকদিবস পালিত হল মেয়োরোডে। সঙ্গীতা নাগ বলেন, 'যাঁদের শিক্ষক হওয়ার কথা তাঁদের রাজপথে বসে শিক্ষকতার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। এটা বাংলার পক্ষে দুর্ভাগ্যজনক। যাঁরা ৫৪০ দিন রাস্তায় বসে শিক্ষক দিবস পালন করছে তাঁরা মেরুদন্ড বিক্রি করা শিক্ষক নয়।'
রোদ-ঝড়-জলের মধ্যেও তাঁরা অবস্থানে অনড় রয়েছেন। একটাই লক্ষ্য স্কুলে নিয়োগ। শুভদীপ মান্নার কথায়, 'আমরা কর্মসূচি নিতে বাধ্য হয়েছি। যাঁরা আজ স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল, তাঁরা আজ এখানে বসে আছি। শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান দিয়ে দিনটা অতিবাহিত করতে চাই। এখানে একটা ক্লাস নেওয়ার কর্মসূচি চলছে। ডেমো ক্লাস নিচ্ছি। কচি-কাঁচারা পারফর্ম করছে যাতে তঁদের পরিবারের বাবা-মায়ের চাকরিটা হয় তার জন্য়। আমরা আর পারছি না। রাস্তায় থাকতে ভাল লাগছে না। জনগণ জানে, সরকার জানে।'
এর আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে শহীদুল্লাহরা। বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও। একাধিকবার নিয়োগের কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। শহীদুল্লাহ বলেন, 'দেখুন আজ আমরা শিক্ষক হয়েও পথে আছি অশিক্ষক মনোভাবাপন্ন দুর্নীতিবাজ মানুষদের জন্য। সেই জন্য আমাদের লক্ষ্য স্কুলে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সান্নিধ্যে থাকা সেই জন্যই এখানে আছি। এই সুখের অনুভবটা এখনও পাইনি। সেটা পাওয়ার লক্ষ্যে এখানে আছি। ৮৯ হাজার চাকরি বা ১ লক্ষ ৮৯ হাজার চাকরি হোক সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমাদের এখানে যাঁরা আছে তাঁদের চাকরিটা এখনও হয়নি। ৬ হাজার চাকরিটা হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের পরেই।'