Advertisment

কঙ্কালসার বাংলার উচ্চশিক্ষা: একযোগে মমতা সরকারের নীতিকে দুষছে এসএফআই-বিদ্যার্থী পরিষদ

দুর্নীতি কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে এ রাজ্যের শিক্ষা ব্য়বস্থাকে।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Higher Education

একসময় ছিল কলেজে ভর্তি নিয়ে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগ। এখন উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে কলেজে কলেজে অধ্যাপক আছেন, ছাত্র নেই, নিয়মিত ড্রপআউট, ছাত্রসংসদ নেই, আছে দাদাগিরি। সর্বোপরি শিক্ষাক্ষেত্রে সামগ্রিক উদাসীনতা নিয়ে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি সরকারের দায় বলেই দাবি করছে। তাঁদের দাবি, সরকার চায় না শিক্ষাব্যবস্থা জারি থাকুক। মানুষ যেন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। সেটাই চাইছে রাজ্য সরকার। শিক্ষার কঙ্কালসার চেহারা এই সরকারের কর্মের ফল বলেই তাঁরা মনে করছেন।

Advertisment

প্রকৃত শিক্ষাব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বড় আন্দোলনে নামতে চলেছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা অনেক দিন ধরে বলছি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার যে চেহারা হয়েছে তাতে ছাত্ররা মনে করছে পড়াশুনা করে কিছু হবে না। এই মেসেজ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পড়াশুনা করে কাজ হবে না। একে তো কাজের অভাব, কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিপুল পরিমান দুর্নীতি। সব মিলিয়ে লেখাপড়ার গুরুত্বটা কমিয়ে দিয়েছে। সরকারকে বলেছিলাম এবিষয়ে সচেতন করতে। বড়লোকের ছেলেমেয়েরা প্রাইভেট ইন্সটিটিউটে চলে যায়। গরীব, মধ্যবিত্তরা কাজে ঢুকে যাচ্ছে। কলেজে পড়ছে না। সরকারি কলেজ ফাঁকা থাকছে।'

কয়েক বছর আগেও কলেজে কলেজে হাজার হাজার টাকা নিয়ে বেআইনি ভাবে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির অভিযোগে তোলপাড় হয়েছে কলকাতা থেকে মফস্বল। অভিযোগ ছিল যোগ্যরা ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, অযোগ্যরা অর্থের বিনিময়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাংশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছিল। অথচ এখন কলেজে কেউ ভর্তি হতে আসছে না। অনুসন্ধান করে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হচ্ছে না। আসন ফাঁকা থাকছে। অধ্যাপকদের একটা অংশ কলেজে এসে হাতগুটিয়ে বসে থেকে, আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফিরছে। অধ্যক্ষরা বলছেন, তাঁদের কোনও কাজ নেই। কোনও কোনও অধ্যক্ষ পারলে এই ধরনের অধ্যাপকদের দিয়ে অন্য কাজ করিয়ে নেয় আর কি! এমনই অবস্থা। ক্ষোভে গজগজ করছেন তাঁরা,কিন্তু কোনও উপায় দেখতে পাচ্ছেন না।

সৃজনের কথায়, 'সাধারণের পড়াশুনার ক্ষেত্রটা উঠে যাবে। পরিকল্পনা করে পাবলিক এডুকেশন শেষ করে দিল। আমাদের আবেদন, সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুক। সিট ফাঁকা থাকছে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি মানুষের শিক্ষার প্রতি ভরসা হারিয়ে ফেলেছে। একটা সময় সরকার বলবে, আমরা আর চালাতে পারছি না। প্রাইভটকে দিয়ে দেবে।'

নিয়োগ ও ভর্তির ক্ষেত্রে দুর্নীতি আজ শিক্ষা ব্যবস্থাকে রসাতলে পাঠিয়েছে বলে মনে করছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। গেরুয়া শিবিরের এই ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সঙ্গীত ভট্টাচার্য বলেন, 'তবড় দুর্নীতির পর সবাই ভেবে নিয়েছে টাকা দিলেই চাকরি পাওয়া যাবে। শিক্ষাগ্রহণের দরকার নেই, ডিগ্রির দরকার নেই। ভর্তির ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জায়গাটা দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে। এই কারণে রাজ্যে ছাত্র সমাজ পিছিয়ে আসছে। প্রাইভেট কলেজ ও স্কুলগুলির রমরমা হয়েছে। এর দায়ও সরকারকে নিতে হবে। যাঁরা আজকে পড়াচ্ছেন তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন জাগছে। কোয়ালিটি এডুকেশনের জন্য পড়ুয়ারা ছুটছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এর দায়ও রাজ্য সরকারের।'

আরও পড়ুন- ঝালদা পুরসভা: বাকিদের ডিগবাজি, লড়াইয়ের স্বার্থে কী করলেন কংগ্রেসের পূর্ণিমা?

কলেজে ছাত্র কম, কোথাও ছাত্র ভর্তি হয়নি। কিন্তু ওই বিভাগে অধ্যাপক রয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, 'এটা প্রতি বছরই হয়, নতুন কিছু না। দেখা যাচ্ছে যে শিক্ষক আছেন কিন্তু দু'চারজন ভর্তি হয়েছে। এটাতে কিছু করার নেই। এটা স্বাভাবিক। দেখা যায় ফিজিক্স না পেলে ইলেট্রনিক্সে এল। তারপর না পেরে সেই সাবজেক্ট ছেড়ে দিল। কমার্স আগের থেকে ভাল হয়েছে। এখন আবার কমার্সে ছাত্র ছাত্রী বাড়ছে।'

SFI ABVP TMCP
Advertisment