চাকরি প্রার্থীরা যে শুধু ধর্নায় বসে থাকবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। ক্ষুদার্থ চাকরি প্রার্থীরা যে কোনও ধরনের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের এক বছর হয়ে গিয়েছে। তাই আর কোনও অপেক্ষা করতে চাইছে না তাঁরা। এদিকে গতকাল বিধায়ক হস্টেলে কথা বলতে গিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা, যা নিয়ে ধুন্ধুমার ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনকারী শহীদুল্লাহ্ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'আগে ভাগে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা আমরা জানচ্ছি না। তবে আন্দোলন চলতে থাকবে। একটা ক্ষুদার্থ মানুষকে যদি ক্ষুদার্থ রেখে দেওয়া হয়। সেই মানুষ কিন্তু থেমে থাকবে না। খাবার পাওয়ার জন্য যে কোনও কাজ করতে পারে যে কোনও সময়। সুতরাং আমরা না খেয়ে মরছি আমাদের অন্যভাবে মারে মারুক। নাহলে সমস্যা। আন্দোলন থামাতে পারেন একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী।'
আরও পড়ুন- নজিরবিহীন, নিয়োগের দাবিতে এবার বিক্ষোভ ছাড়ল মেট্রো স্টেশনের ভিতর, হুলস্থূল অবস্থা!
প্রায় ৯০০ দিন হতে চলল মেয়োরোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান করে চলেছে শিক্ষক পদের চাকরি প্রার্থীরা। সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১০ অগাস্ট। বিধায়ক হস্টেলে তাঁরা হাজির হয়েছিলেন বঞ্চনার কথা বলতে। যাতে বিধায়করা বিধানসভায় তাঁদের পরিস্থিতির কথা জানায়। তবে তা নিয়ে তীর্যক মন্তব্য শুনে আন্দোলনকারীরা পাল্টা বলতে ছাড়ছে না। শহীদুল্লাহ্ বলেন, 'আমাদের বিষয়ে যাঁরা জানেন বা যাঁরা নিরপেক্ষ মানসিকতার তাঁরা কেউ কিন্তু আমাদের সমালোচনা করেননি। এমনকী গতকাল ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক আমাদের পক্ষে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। পুলিশের অভিযোগকে তোয়াক্কা করেননি। আমাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। আমরা সঠিক পথে আছি, আমরা দ্বিধান্বিত নই। পুলিশকে আমরা নাকি লাথি, গুসি, কিল মেরেছি?'
বিধায়ক আবাসনের গেটে আন্দোলনকারীদের অবস্থান প্রসঙ্গ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শহীদুল্লাহ্ বলেন, 'সঠিক জায়গায় কথা বলছেন না কেন। আমরা ৯০০ দিন বসে আছি অধ্যক্ষ তো কথা বলেননি। আজ বিধানসভা তিন বছর চলছে। ৯০০ দিন চাকরি প্রার্থীরা অপেক্ষা করছে। কখনও সেই ব্যাপারে আলোচনার বিষয়বস্তু করলেন না। আমরা নিরুপায় হয়ে বাংলার বিধায়কদের শান্তিপূর্ণ ভাবে জানাতে গিয়েছিলাম।'
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন চাকরি প্রার্থীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন। গতবছর ২৮ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আন্দোলনকারীরা সমস্যা সমাধানে আলোচনা করেছেন। একজন তৃণমূল সাংসদ কিভাবে চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে সরকারি সমস্যা নিয়ে বৈঠক করেন তা নিয়ে বিরোধীরাও প্রশ্ন তুলেছিল। শহীদুল্লাহ্ বক্তব্য, 'আমরা মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের ওপর আস্থা রেখে একটা বছর চুপ ছিলাম। এবার আন্দোলন থেমে থাকবে না।'