শ্রীকান্ত মোহতার গ্রেফতারি বাংলা বিনোদন জগতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধারের প্রভাব এবং প্রতিপত্তি সর্বজনবিদিত। একজন প্রযোজককে প্রায় আপামর বাঙালি নামেই চেনেন, এমন ঘটনা বাংলা বিনোদন জগতে আগে তেমন ঘটে নি। শ্রীকান্তের এই ব্যাপ্তি ও পরিচিতির একটা বড় কারণ নিঃসন্দেহেই তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত শ্রীকান্ত। কয়েকমাস আগে চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চেও মমতার সঙ্গে দেখা গিয়েছিল শ্রীকান্তকে। বাংলা সিনেমা জগতে তাঁকে ছাড়া কাজ করা মুশকিল, এমন কথা বলে থাকেন সিনে ও টেলি জগতের অনেকেই।
অ্যাক্রোপলিস মলের আঠারো তলার ঝাঁ চকচকে অফিস এবং প্রভাবশালী সব কর্মচারী- এমনভাবেই শুরু হয়নি মোহতাদের জীবন। মোহতার জন্ম কলকাতায়। গোড়ায় তাঁদের ছিল রাখী বিক্রির ব্যবসা। ফিল্ম ব্যবসায় তাঁরা পা রেখেছিলেন ডিস্ট্রিবিউশন দিয়ে। মণি রত্নমের বম্বে ছবির তাঁরাই ছিলেন পরিবেশক।
আরও পড়ুন, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার ভেঙ্কটেশ কর্ণধার
এখনকার অন্যতম পরিচালক সৃজিত মুখার্জির সমস্ত ছবির প্রযোজক এই শ্রীকান্ত মোহতারাই। এখন বাজারে চলছে সদ্যমুক্ত শাহজাহান রিজেন্সি। এরই মধ্যে ২৩ জানুয়ারি এসে গেছে ভেঙ্কটেশ প্রযোজিত, সৃজিত পরিচালিত গুমনামী ছবির পোস্টার। সে ছবির শুটিংও শুরু হয়ে গেছে। গ্রেফতারির কিছু আগেই শ্রীকান্তের ফেসবুক প্রোফাইলে প্রকাশিত হয়েছে এসভিএফ পরিবেশিত মণিকর্ণিকা ছবির পোস্টার। মণিকর্ণিকার মুক্তি ২৫ জানুয়ারি, গ্রেফতারির পর দিনই।
বিনোদন বাজারের টাইকুন বলে খ্যাত শ্রীকান্ত মোহতার মোট তিনটি ছবির কাজ চলছে। এই ছবিগুলি হল 'ভিঞ্চি দা', 'খেলা এখন', 'গুমনামী'। চলছে, 'গুড়িয়া যেখানে গুড্ডু সেখানে', 'রানু পেল লটারি', 'নিশির ডাক', এই সিরিয়ালগুলির কাজও। এ ছাড়া রয়েছে তাদের নবতম উদ্যোগ হইচই অ্যাপ। কাজ চলছে সে অ্যাপের ৬টি প্রজেক্টেরও।
শ্রীকান্ত মোহতার বিনোদন বাজারে কুখ্যাতিও কম নেই। অন্য কাউকে ব্যবসা করতে না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এসভিএফের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কিছুদিন আগেই মুখ খুলেছিলেন দেব। এ ছাড়াও তাঁর পরিবেশিত ছবি বাজারে যখন চলে, তখন অন্য কোনও প্রযোজক-পরিবেশক হল পান না বলেও অভিযোগ উঠেছে বারবার।
শ্রীকান্ত মোহতার গ্রেফতারি বিনোদন বাজারে কতটা অভিঘাত ফেলবে, ভেঙ্কটেশের প্রজেক্টগুলির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। এসভিএফ ফিল্মসের বিভিন্ন প্রকল্পে মাইনে করা কর্মচারীরা যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন বহু চুক্তিভিত্তিক কর্মী। প্রকল্পগুলি বন্ধ হয়ে গেলে তাঁদের যে ব্যাপক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হবে, তাতে সন্দেহ নেই।