Advertisment

বগটুইয়ে নাটের গুরু কে? রহস্য লুকিয়ে দুই নেতার অট্টালিকায়

বগটুই-কাণ্ডের তিন দিন পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একাধিক পদক্ষেপ করেছে পুলিশ-প্রশাসন।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Who is the main culprit in Rampurhat Bagtui Massacre?

নিহত তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের বাড়ি। ছবি-পার্থ পাল।

বগটুই-কাণ্ডের তিন দিন পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একাধিক পদক্ষেপ করেছে পুলিশ-প্রশাসন। গ্রেফতার করা হয়েছে রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আনারুল হোসেনকে। রামপুরহাট থানার আইসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শাস্তির কোপে পড়েছেন এসডিপিও। রাজনৈতিক মহলের কাছে সব থেকে বড় প্রশ্ন, বগটুই কাণ্ডে মূল পাণ্ডা কে? কে এই ঘটনার নাটের গুরু? দুই স্থানীয় তৃণমূল নেতার বিপুল বৈভবের উৎসই বা কী?

Advertisment

সোমবার রাতের ঘটনা পরের দিন প্রকাশ্যে আসতেই আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে নানা মন্তব্য পরে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। পরিকল্পনা করে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধানকে খুন করার পর জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে খাক করে মারা হয়েছে বগটুইয়ের ৮ জন গ্রামবাসীকে। যাঁরা খুন করেছে, তাঁরাই আগুন লাগিয়ে দিতে পারে এমন তত্ত্বও কেউ কেউ দাবি করছেন।

এদিকে খোদ ভাদু শেখের স্ত্রী দাবি করেছেন, তাঁদের অনুগামীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে তিনি ওই ধৃতদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন মঙ্গলবার। অন্যদিকে, আগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত পরিবারের পক্ষে মিহিলাল তাঁদের লোকেদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, সিট তদন্ত করছে। সেই তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় থাকতে হবে।

publive-image
তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনের প্রাসাদপম বাড়ি। ছবি- পার্থ পাল।

এদিকে আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করার পর নানা প্রশ্ন উঁকি মারছে রাজনৈতিক মহলে। অভিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন, আইসি, এসডিপিও চলতেন তৃণমূল ব্লক সভাপতির কথায়? রাজনৈতিক খুন, তারপর উত্তপ্ত এলাকা, একের পর এক বাড়িতে হামলা করে জীবন্ত আগুন, জেলা পুলিশের আর কোনও কর্তার কাছে এই খবর ছিল না?

আরও পড়ুন- কর্তব্যে গাফিলতি, বগটুই-কাণ্ডে সাসপেন্ড রামপুরহাট থানার আইসি ত্রিদীপ প্রামাণিক

এই ব্লক সভাপতি ছাড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও শীর্ষ নেতা ভাদু খুনের ঘটনা বা তার পরের পরিস্থিতি জানতে পারেননি? রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও কি ঘটনা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না? জেলা তৃণমূলের সভাপতি তো পরের দিন টিভি বার্স্ট করে আগুন লেগেছিল বলে মন্তব্য করেছিলেন। শর্টসার্কিট, সিলিন্ডার বার্স্টের কাহিনীও বাজারে ছড়িয়েছিল। কেউ কী বুঝতে পারেননি বগটুই গ্রামের ঘটনা কতদূর গড়িয়েছে?

বগটুইয়ের দুটি ঘটনার পর নানা প্রশ্নের জবাব অধরা রয়ে গিয়েছে। আনারুলকে গ্রেফতার করে কী সেই সব প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে? এদিকে ভাদু শেখের রাজপ্রাসাদ ও আনারুলের মহল দেখে চোখ ছানাবড়া হওয়ার যোগার রাজ্যবাসীর। কীভাবে বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়েছেন তাঁরা? কেউ ছিলেন রাজমিস্ত্রি, কেউ বা ছিলেন গাড়ির চালক।

ভাদুর নার্সিংহোম রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁর বাবা। এঁরা কীভাবে, কাদের মদতে বিপুল ধনসম্পদের মালিক হলেন সেই রহস্য ভেদ করলেই বহু অজানা তথ্য সামনে উঠে আসবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। কাদের প্রশ্রয়ে ভাদু ও আনারুল প্রবল প্রতাপশালী হয়ে উঠেছিল? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে অভিজ্ঞ মহল। 

Advertisment