বাংলা দিবস উদযাপন করলেই কি দুনীতি বন্ধ হবে? ডিএ পাবেন সরকারি কর্মচারীরা? 'বাংলা দিবস' প্রস্তাব নিয়ে বিধানসভায় বিতর্কে এই প্রশ্ন তুলছিলেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। নিজের বক্তব্যের শুরুতেই তার জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন স্বাধীনতার ৭৬ বছর পর 'বাংলা দিবস' পালনের উদ্যোগ তাই স্পষ্ট করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?
বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস কবে? তা ঠিক করতে তৎপর নবান্ন। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবসের জন্য ২০ জুনকে নির্ধারিত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। তারপরই ওই উদ্যোগ তীব্র হয়। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এতদিন বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয়নি কারণ এতদিন ২০ জুন কেউ পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করেনি। স্বাধীনতার এত বছর বাদে আমরা এসব নিয়ে কিছু জানতাম না। কিন্তু এ বছর কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ২০ জুন রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে। রাজ্যপালকে ওই দিনটি না পালন করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তাই এবার আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। বিধানসভা থেকেই উদ্যোগ নিয়েছি না হলে ভুল দিনটিই বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস বলে নবপ্রজন্ম জানবে। ভুল দিনের সাক্ষী থাকবে। এখন জোর করে আমাদের ওপর জাতিদাঙ্গার একটা দিন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সবকিছু চাপিয়ে দিলে সহ্য করব না। বাংলার মানুষ বিভেদকামী দিনে রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস মানবে না।'
মোদী সরকারের বিজ্ঞপ্তি 'একতরফা-বিভেদকামী'
২০ জুন রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস বলে দাবি করছে বিজেপি। কেন্দ্রেও এই মর্মেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যা নিয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রী। মোদী সরকারের সিদ্ধান্তকে 'একতরফা, বিভেদকামী' বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ১৯৪৭ সালের ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা হয়নি। তাই ওই দিন কোনভাবেই রাজ্য দিবস বলে মেনে নেওয়া যায় না।
আরও পড়ুন- মমতার সাধের ‘বাংলা দিবস’, ঘটা করে প্রস্তাব পেশ, পরিণতি জানালেন শুভেন্দু
আরও পড়ুন- পয়লা বৈশাখই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, রাজ্যপাল বেঁকে বসলে? কড়া উত্তর মমতার
রাজ্যপালের সাক্ষরকে থোড়াই কেয়ার!
বিতর্কের সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, ১লা বৈশাখ 'বাংলা দিবস' বিলে সাক্ষর করবেন না রাজ্যপাল। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, 'রাজ্যপাল সই না করলে কিচ্ছু যায় আসে না। আমরা পালন করব। ১ বৈশাখ বাংলা দিবস পালন হবেই। বাংলার প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে আমরা ওই দিনটিকেই স্বীকৃতি দেব। দেখি কার শক্তি বেশি। মনোনিত ব্যক্তির, নাকি নির্বাচিত সরকারের।রাজ্যপালের নাম না উঠলে আমিও এসব বলতাম না।'
বিজেপি বিধায়কদের নিশানা করে মমতার সাফ কথা, 'আজ আমনারা ক্ষমতায় আছেন বিধানসভায় পাস হওয়া বাংলা দিবসের তারিখে সাক্ষর করলেন না। কাল ক্ষমতা উল্টোলে আমরা সেটা করে দেব।'
'বাংলার মাটি, বাংলার বায়ু', বাংলার রাজ্য় সঙ্গীত
বাংলার রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে পাস হল কবিগুরুর 'বাংলার মাটি, বাংলার বায়ু' গানটি। পরে ১৬৭-৬২ ভোটের ব্যবধানে রাজ্য বিধানসভায় ধ্বনী ভোটে 'বাংলা দিবস' পালনের প্রস্তাব পাস হয়। পয়লা বৈশাখই 'বাংলা দিবস' পালনের পক্ষে বিধানসভা।