সনিয়া-রাহুলের পাশে মমতা। কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূলসহ বিজেপি বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোট গঠন। এই জোটে এসেছে আম আদমি পার্টিও। পটনা, বঙ্গালুরুতে বৈঠকের পর মুম্বাইতে বৈঠক। কংগ্রেস-তৃণমূল কাছাকাছি আসায় রাজ্য কংগ্রেসের একাংশ বিরোধিতা করতেও ছাড়ছে না। এর ফলে বিপাকে পড়েছে প্রবল মমতা বিরোধী রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিশেষত অধীর চৌধুরী ও দীপা দাশমুন্সির বক্তব্যের পর তাঁরা এ রাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারনা মোদী হঠাতে কংগ্রেসও তৃণমূলের সঙ্গে জোট ধর্ম রাখার চেষ্টা করবে। পাশাপাশি আপের সঙ্গে কংগ্রেসের মৈত্রতা বজায় রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেস ও আপ ভোট-কাটুয়া পার্টি বলে বরাবর অভিযোগ করে এসেছে। এখন মোদীকে হঠাতে ইন্ডিয়া জোটে শামিল হয়েছে এই তিন দল। তবে এই জোটের ফলে বাংলায় কংগ্রেসের ভবিষ্য়ৎ বড় প্রশ্নের মুখে পড়তে চলেছে বলে মনে করছে দলের একাংশ। এমনকী তাঁরা মনে করছে এরাজ্যেও ঘোষণা করে নির্বাচনী সমঝোতা না হলেও অলিখিত জোটের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক মহলও মনে করছে, সর্বভারতীয় স্তরে দলের কথা ভেবে কংগ্রেস তৃণমূলকে সঙ্গ দেওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা।
গোয়া, ত্রিপুরা বা মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন অন্য় রাজ্যেও লড়াই করবে তৃণমূল তবে তা ক্ষমতা দখলের জন্যই। যদিও মেঘালয় ছাড়া অন্য়ত্র কোনও দাগ কাটতে পারেনি তৃণমূল। তবে কিছুটা হলেও গোয়ায় বিরোধী ভোটে ভাগ বসিয়েছিল মমতার দল। ত্রিপুরায় তো যৎসামান্য় ভোট জুটেছিল ঘাসফুল শিবিরের। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এরাজ্যে কংগ্রেসের সাংসদ মাত্র ২ জন। এর বেশি আসনে জয়ের পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। কিন্তু অন্য় ৩ রাজ্য়ে লোকসভার আসন সংখ্যা অনেকটাই বেশি। ওই তিন রাজ্য়ে তৃণমূল কংগ্রেস না থাকলে অনেকটাই ফ্রি হয়ে লড়াই করার সম্ভাবনা বেশি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটের সূত্র বলেছেন, 'যেখানে যাঁর ক্ষমতা বেশি সে সেখানে লড়াই করবে।' এদিকে আপের সঙ্গে সমঝোতা করলে গুজরাট, কর্নাটক, গোয়াতে কংগ্রেস বাড়তি অক্সিজেন পাবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল ও আপের সঙ্গে কংগ্রেসের ব্যাপক বিরোধ থাকলেও ২০২৪-এ মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে কংগ্রেসের নরম মনোভাব নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গেও কংগ্রেসকে অনেক আশা ছেড়ে দিতে হবে। একপক্ষ সর্বভারতীয় জোটের জন্য় সওয়াল করছে, কৌস্তভ বাগচীরা বাংলায় কংগ্রেসের জন্য় পৃথক ভাবে বিরোধিতা করে চিৎকার করছেন প্রকাশ্যে। আবার একদল কংগ্রেস নেতৃত্ব নীরবতা পালন করছে। এখন তৃণমূল ও আপ কংগ্রেসের ভোট-কাটুয়া পার্টি নয়। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে ততো কংগ্রেস-তৃণমূল সঙ্গ বাড়বে বলেই মনে করছে অভিজ্ঞমহল।