প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত অতীতের সমস্ত রেকর্ডকে ম্লান করে দিয়েছিল। দিন শুরুর পরই যে কোনও ইস্যু নিয়েই দুপক্ষ ময়দানে নেমে পড়ত। এহেন রাজ্যপাল যখন উপরাষ্ট্রপতি পদে বিজেপির প্রার্থী হলেন তখন অন্য ইস্যু দেখিয়ে ধনকড়ের বিরুদ্ধে ভোটই দিল না মমতার দল। এবারও কি মেঘ-বৃষ্টি শুরুর আগে রাজভবন ও নবান্নের আবহাওয়া গুমোট গরম? পরিস্থিতির দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।
রাজ্যপাল পদে নিয়োজিত হওয়ার পর রাজ্যের সঙ্গে সখ্যতার জন্য বিরোধী দলনেতা থেকে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব সিভি আনন্দ বোসের ওপর প্রকাশ্যে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। মমতা ঘনিষ্ট আইপিএস নন্দিনী চক্রবর্তীকে রাজ্যপালের প্রধান সচিব পদে থাকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যপালের আবেদনে সাড়া দিয়ে শেষমেষ বুধবার সরানো হয় ওই আইপিএসকে। তবে রাজভবন ও রাজ্যের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কতদিন বজায় থাকবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে সন্দেহের আবহ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন- বিতর্ক বাড়াল না নবান্ন, রাজভবন থেকে অব্যাহতি নন্দিনীকে
আইপিএসের বদলি নিয়ে সৌজন্যতার কথা বললেও পরিস্থিতি যে যখন তখন বদলে যেতে পারে সে আশঙ্কা করছে তৃণমূল কংগ্রেস, তা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায় অনেকটাই পরিস্কির। তাঁর কথা অনুযায়ী, রাজ্যপাল সুর বদলালে তৃণমূলও চুপ করে বসে থাকবে না। পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, এক্ষেত্রে নন্দিনীকে সরানো নিয়ে আপতত ধীরে চলো নীতি নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। আগ বাড়িয়ে না খেলে পুরো বিষয়টির ওপর নজর রাখছে ঘাসফুল শিবির। কৌশল রচনা চলছে।
২৬ জানুয়ারি রাজভবনে হাতে খড়ি অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির থাকলেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হাজির হননি। বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের প্রশংসা করেছেন সিভি আনন্দ বোস। মোটের ওপর নয়া রাজ্যপালের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখেই চলেছে রাজ্য। কুণাল ঘোষ ইঙ্গিত দিলেও সেভাবে কড়া কথা বলেননি। রাজনৈতিক মহলের মতে, এখনও পর্যন্ত রাজ্যপাল ইস্যুতে ধৈর্যের বেড়াজালে আটকে রয়েছে তৃণমূল। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, তারপর লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা জনিত একদফা বিবৃতি জারি করেছে রাজ্যপাল। ধনকড় জমানার চরম অস্বস্তি সম্ভবত আর চাইছে না তৃণমূল কংগ্রেস। তবে রাজ্য-রাজ্যপালের সম্পর্ক কতদিন অটুট থাকবে, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।