কংগ্রেসের তুলোধুনা, তারপর একলা চলোর ডাক দিয়ে একেবারে জোট-বার্তা! ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে একেবারে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির উপনির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে পরাজয়ের পর পর্যন্ত একএক সময় এক একরকম বার্তা। কর্নাটকের নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে ধীরে ধীরে পট পরিবর্তন হতে থাকে। জয়ের পর মুখে নাম আসছিল না। কংগ্রেস বা রাহুল কোনওটাই না। তারপর এল কংগ্রেস, শেষমেশ জোটের বার্তা। হল টা কি তৃণমূল সুপ্রিমোর?
সিপিএমের বি-টিম অভিযোগ তুলে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সেই হাতের হাত ধরেই বামেদের রাজ্যপাট থেকে বিদায় দিয়েছিল ঘাসফুল শিবির। কুর্সিতে বসার কিছু দিনের মধ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের মন্ত্রীসভা থেক সরে যায় কংগ্রেস। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবার কংগ্রেস ও বামেরা এক জোট হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। সেই বন্ধুত্ব এখনও বিদ্যমান। এখন তো এরাজ্য়ে কংগ্রেস-তৃণমূলের সাপে-নেউলের সম্পর্ক। সেই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি কর্নাটকে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর ফের হাতশিবির সম্পর্কে নরম মনোভাব দেখাতে শুরু করে তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতৃত্ব।
রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল করার পর তীব্র প্রতিবাদ করে তৃণমূল কংগ্রেস। পথের বাঁক ফের শুরু হয়। কিন্তু তার আগে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে পরাজয়ের পর তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি ও সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকে সাগরদিঘিতে হারানো হয়েছে বলে মমতা দাবি করেন। তৃণমূলনেত্রী স্পষ্ট ঘোষণা করেন, আগামী ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল একাই লড়াই করবে। রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল হতেই তৃণমূল কড়া সমালোচনা করে বিজেপির। কর্নাটকে নির্বাচনে বিজেপি চাপে আছে এই চিত্র পরিস্কার হতেই একা লড়াই থেকে সরে আসার বার্তা দিতে থাকে তৃণমূল। কর্নাটকে বিজেপির পরাজয়ের দিন প্রথমে নাম না করে অভিনন্দন জানানো হয়। পরে অবশ্য় মুখে কংগ্রেসের নামও আনেন তৃণমূল নেত্রী। শেষমেশ জোটবার্তাও দেন সনিয়া, রাহুলের কংগ্রেসকে। যদিও এখনও পর্যন্ত সাড়া মেলেনি।
৫৪৩ লোকসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেসকে ২০০ আসনে লড়াইয়ের কথা বলেছেন মমতা। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিরোধী জোটের আগেই কংগ্রেসকে আসন রফার ক্ষেত্রে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে মমতা। যদিও এরাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করে, তৃণমূলের এই জোটবার্তার কোনও অর্থ নেই। বিজেপি-তৃণমূল গোপন আঁতাত রয়েছে বলেই রাজ্য কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতৃত্বই দাবি করে আসছে। তাঁরা মনে করছে, এ যেন লড়াইয়ের আগে কংগ্রেসের মনোবল ভেঙে দেওয়ার বার্তা। এখানে সর্বভারতীয় স্তরের কংগ্রেস নেতা আইনজীবী হাইকোর্টে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করলে আবার বিক্ষোভ দেখাব বলে হুঁশিয়ারি দিয়েই রেখেছে রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচি। তাছাড়া সারা দেশে মাত্র ২০০ আসনে লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে তৃণমূল খোয়াব দেখছে বলে মনে করছে কংগ্রেস। তৃণমূল নেত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত টু শব্দটিও করেনি