সর্বভারতীয় রাজনীতিতে দিল্লি কা লাড্ডুর কথা একটা সময়ে খুব প্রচলিত ছিল। ডিসেম্বর বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লাড্ডু উৎসব। চলতি ডিসেম্বরেই ডায়মন্ডহারবারে এক গাড়ি লাড্ডু নিয়ে যাবেন বলে কমিটমেন্ট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে বিজয় উৎসব পালন করবেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। ডিসেম্বরে কিছু একটা ঘটবে, শুভেন্দুর লাগাতার এই ঘোষণায় বঙ্গ রাজনীতির হাইভ এখন তুঙ্গে। বিজেপি-তৃণমূলের কর্মসূচি ও শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্যে ডিসেম্বর হাইভ স্পষ্ট।
ডিসেম্বর বিপ্লবের পর এবার লাড্ডু রাজনীতির সূত্রপাত। শুভেন্দু বলেছেন, ডিসেম্বরে বড় ডাকাত ধরা পড়বে। তার সঙ্গে জড়িয়েছেন কয়লা, গরু পাচারকে। এখানে ডাকাতের নাম না বলাটাই কাহিনীর টুইস্ট বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মেঠো কথায় বলে বাজার গরম। কিন্তু ডায়মন্ডহারবারেই কেন লাড্ডু নিয়ে গিয়ে উৎসব পালন করবেন বিরোধী দলনেতা? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
এদিকে শনিবার কাঁথি শহরে জনসভা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অভিষেক বলেছেন, ক্ষমতা থাকলে আমাকে জেলে ঢুকিয়ে দেখাক। যতবার সিবিআই ডেকেছে ততবার গিয়েছি। বুক চিতিয়ে লড়াই করব। বরং ইডি, সিবিআই ও এনআইয়ের নাম করে জামিন করিয়ে দেব বলে তোলাবাজি করার অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক।
আরও পড়ুন- বগটুইকাণ্ড: বিরাট সাফল্য CBI-এর, ‘লুকোচুরি’ খেলে জালে মূল অভিযুক্ত লালন শেখ
এই ডিসেম্বরেই আবার গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। গেরুয়া শিবির দাবি করছে সেখানে ফের তারা ক্ষমতায় আসবে। ডিসেম্বরেই আবার বড় ডাকাত ধরার আগাম ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু। এসবের মধ্যেই ডিসেম্বরে অভিষেক গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবারে লাড্ডু নিয়ে উৎসব করার নয়া কমিটমেন্ট শুভেন্দুর, বঙ্গ রাজনীতিতে এই কর্মসূচি নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে।
পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সামনেই রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন। দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে তৎপর বিজেপি-তৃণমূল দুই পক্ষই। ২০২১ নির্বাচনের পর বিজেপি থেকে স্রোতের মতো তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। গিয়েছেন বিধায়করাও। ঘটনা যাই ঘটুক না কেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কর্মীদের মনোবল অটুট রাখতে গেরুয়া শিবিরকে নানা কৌশল অবলম্বন করছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও কাঁথিতে ফের হুংকার ছেড়ে দরজা খোলার বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ, একদিকে কাঁথি চলো অন্যদিকে ডায়মন্ডহারবার চলো। কারও বাড়ি কারও সংসদীয় কেন্দ্র এখন জনসভার কেন্দ্রস্থল।
আরও পড়ুন- ‘অনেক বেশি পেয়েছে’, গ্রামবাসীদের ‘না-পাওয়া’ ক্ষোভ সামলাতে সাফ জবাব শতাব্দীর
কীসের জন্য ডায়মন্ডহারবারে উৎসব বা কীসের জন্যই এক গাড়ি লাড্ডু বিতরণ তা খোলসা করেননি শুভেন্দু। ধন্দ তৈরি করেছেন। কথায় আছে, দিল্লির লাড্ডু খেলেও পস্তাবে না খেলেও পস্তাবে। এবার শুভেন্দুর লাড্ডু রাজনীতি কোন দিকে গড়ায় সেদিকেই নজর রয়েছে পর্যবেক্ষক মহলের।