কয়েক দিন আগেই বিজেপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রাখার কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী রাহুলের বিরুদ্ধে জোরালো আক্রমণ করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার শহিদ মিনারের জনসভায় একেবারেই উল্টো সুর শোনা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। কেন তৃণমূল কংগ্রেসের হঠাৎ এই রাহুল প্রেম তা নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
১৭ মার্চ কালীঘাটে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পরই তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে কড়া ভাষায় তোপ দাগেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বিজেপি ও কংগ্রেসের সঙ্গদে সমদূরত্বের কথা বলেন প্রবীণ ওই তৃণমূল নেতা। ওই দিনই সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, পাশাপাশি কংগ্রেসকে চাপে রাখতে বিভিন্ন বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠকের কথা ঘোষণা করে তৃণমূল। কিন্তু এদিন রাহুল ইস্যুকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস কড়া ভাষায় আক্রমণ শানাল বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিষেক এই ইস্যুতে কায়দা করে টেনে আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে।
আরও পড়ুন- রাহুল মামলাই অস্ত্র অভিষেকের! শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছে তৃণমূল
দীপক ঘোষের লেখা বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করায় কংগ্রেস নেতা আইনজীবী কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূল কর্মীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করেছিল কলকতা পুলিশ। সেই ঘটনার পর কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকে। রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খোয়া যেতেই জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের গুরুত্ব ফের বেড়ে গিয়েছে। বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি রাহুল ইস্যুতে বিজেপিকে তুলোধোনা করে ছাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের মোদী বিরোধিতা করাই স্বাভাবিক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাহুলকে হাতিয়ারি করে মোদী ও শুভেন্দুর শাস্তি দাবি করেছেন অভিষেক।
আরও পড়ুন- জেলবন্দি মদন-কুণালদের কীসের চাপ? পর্দা ফাঁস অভিষেকের
বাম ও কংগ্রেস তৃণমূল কংগ্রেসকে বিজেপি বি-টিম বলেই দাবি করে আসছে। গোয়া, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে গত বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করে তৃণমূল। গোয়া ও ত্রিপুরায় শূন্য হাতে ফিরতে হয় মমতার দলকে। মেঘালয়ে ৫টি আসনে জয় পেয়ে কোনওরকমে মুখরক্ষা করে। বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই তৃণমূল ওই সব রাজ্যে নির্বাচনে লড়াই করেছে বলে কংগ্রেস দাবি করে। পরবর্তী ক্ষেত্রে জাতীয় রাজনীতিতেও কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি করতে থাকে তৃণমূল। কিন্তু রাহুল ইস্যুতে প্রথমে মমতা-অভিষেকের টুইট, এবার জনসভা থেকে সরাসরি বিজেপিকে বার্তা দিলেন অভিষেক। রজনৈতিক মহলের মতে, সামনের বছর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে কি ফের কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস? না ফের কোনও নতুন কৌশল নিয়েছে তৃণমূল? সময়েই এই প্রশ্নেবর জবাব মিলবে বলে মনে করে অভিজ্ঞ মহল।
আরও পড়ুন- ধরনামঞ্চে ম্যাজিক, মমতার হাতেই কালো কাপড় হচ্ছে সাদা!