'ডোন্ট টাচ মি।' শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই দিনভর বিরোধী দলনেতাকে বিঁধল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থেকে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দফায় দফায় নবান্ন অভিযানে শুভেন্দুর রণে ভঙ্গে দেওয়াকে কটাক্ষ করে চললেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, পুলিশের রণকৌশলে বিদ্ধ হতে হয়েছে শুভেন্দুকে। যদিও বিজেপি এর পিছনে চক্রান্ত দেখছে।
রাজ্য বিজেপি মঙ্গলবার তিন দিক থেকে নবান্ন অভিযান শুর করে। সাঁতরাগাছির দিক থেকে অভিযানের নেতৃত্ব দেন বিরোধী দলনেতা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, হাওড়া ময়দান থেকে দলের রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ও হাওড়া রবীন্দ্র সেতুর দিকে সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রতিটি জায়গায় ব্যাপক পুলিশি বন্দোবস্ত ছিল। জলকামান ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়েছে তিনটে ক্ষেত্রেই। টিয়ার গ্যাসের শেলও পাঠানো হয়েছে। তবে শুভেন্দুর গ্রেফতারি নিয়েই তোলপাড়় রাজনৈতিক মহল।
সাঁতরাগাছিতে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ছিলেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাহুল সিনহারা। তখন স্লোগান দিচ্ছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। সেই সময় মহিলা পুলিশ যায় শুভেন্দুর কাছে। ছবিতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতার পিঠের দিকে হাত বাড়িয়ে ওই মহিলা পুলিশ কর্মী বলতে থাকেন চলুন। শুভেন্দু বলে ওঠেন, 'ডোন্ট টাচ মি। ডোন্ট টাচ মাই বডি। ইউ আর লেডি, আই এম মেল। আপনি লেড গায়ে হাত দেবেন না। জেন্টস পুলিশ ডাকুন'।
আরও পড়ুন- খেলা জমলো দ্বিতীয় রাউন্ডে, নবান্ন অভিযানে বিজেপির নয়া কৌশলে নাজেহাল পুলিশ
তখন ডিসি সাউথ আকাশ মেঘারিয়া বলেন, 'পুলিশ তো পুলিশই হয়। লেডিস জেন্টস হয় না।' তারপর তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। বিরোধী দলনেতার ওই মন্তব্য়ের পর তৃণমূল বলতে শুরু করে, আন্দোলনের ময়দান থেকে পালিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু। এই নেতাকে কর্মীরা কী করে ভরসা করতে পারে বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল নেতৃত্ব। দুই মহিলা পুলিশ তাঁদের কর্তব্য করছিলেন বলেই তৃণমূলের দাবি।
আরও পড়ুন- ‘নবান্ন অভিযানে লোকই হয়নি, বেলুন ফুস’, BJP-র মেগা ইভেন্টকে পাত্তাই দিলেন না মমতা
রাজনৈতিক মহল মনে করে, সাধারণত মহিলাদের ক্ষেত্রে মহিলা পুলিশ বা পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষ পুলিশকে আইনত ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়। সাঁতরাগাছিতে মহিলা পুলিশ শুভেন্দুকে গ্রেফতার করতে যাওয়ায় বিরোধী দলনেতা বিপাকে পড়ে যান। ছটফটানি করাও কার্যত সম্ভব হয়নি তাঁর। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, হাত ধরার নাম করে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনার চক্রান্ত করা হয়েছিল। কার্যত দুই মহিলা পুলিশের উপস্থিতিই বিরোধী দলনেতার আন্দোলনকে ভোঁতা করে দিয়েছে, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।