Advertisment

দেবতা জ্ঞানে পুজো গ্রামেরই এক কৃষককে! অপার শ্রদ্ধায় এমন অসীম ভক্তির কারণ জানেন?

এলাকারই একদল মহিলার এমন কাণ্ডে অভিভূত ওই কৃষক।

IE Bangla Web Desk এবং Nilotpal Sil
New Update
women worship a farmer in Arambag as god

কৃষককে দেবতা জ্ঞানে পুজো করছেন গ্রামের মহিলারা।

গোটা কৃষক সমাজ আমাদের অন্নদাতা। শক্ত চোয়ালে দিনভর হাড়ভাঙা পরিশ্রমে তাঁরাই ফলান সোনার ফসল। এবার কৃষক সমাজের এক প্রতিনিধিকেই অনন্য শ্রদ্ধায় বরণ করে নিলেন একদল গ্রাম্য মহিলা। তাঁদের অপার শ্রদ্ধা এ অসীম ভক্তির এমন ছবি সত্যিই বিরল।

Advertisment

হুগলির আরামবাগের আসনপুর গ্রাম। এই গ্রামেরই বাসিন্দা এক কৃষককে দেবতা রূপে পুজো করলেন এলাকারই একদল মহিলা। অন্নদাতা হিসেবে বিরল সম্মান জানানো হল কৃষক সমাজেরই এই প্রতিনিধিকে। শাঁখ বাজিয়ে, বরণ ডালায় ফল-ফুল সাজিয়ে পুজো করা হল এই কৃষককে। আরামবাগের হরিণখোলা-১ নম্বর পঞ্চায়েতের আসনপুর গ্রামের এই ঘটনা এখন লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে।

এলাকার এক কৃষক কাশীনাথ ঘোষ। তাঁকে 'টোপা' ( এক বিশেষ ধরনের টুপি) পরিয়ে বরণ করে নিতে দেখা গেল গ্রামেরই একদল মহিলাকে। মাঝবয়সী কাশীনাথ জৈব পদ্ধতিতে চাষ-আবাদ করেন। কীটনাশকের ব্যবহার না করেই জৈব পদ্ধতিতে চাষের কাজ করে ব্লক থেকে মহকুমা, জেলা এমনকী রাজ্যস্তরেও নানা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। গত বছর দিল্লি থেকেও তিনি পুরস্কার পেয়েছেন।

কাশীনাথ ঘোষ নামে ওই কৃষককে সম্মান জানানো প্রসঙ্গে স্থানীয় ছবি ঘোষ নামে এক মহিলা বললেন, "আমরা প্রতি বছর কৃষকদের পুজো করি। ওঁরা যোগ্য সম্মান পান না। অথচ ওঁরাই চাষবাষ করেন বলে আমাদের অন্ন জোটে। তাই আমরা কাশীনাথবাবুকে বেছে নিয়ে তাঁকে চাল, আলু ও বিভিন্ন ফল দিয়ে বরণ করেছি। সাত পাক ঘুরে তাঁকে পুজো করেছি দেবতা জ্ঞানে।"

publive-image

কৃষককে মাঝে রেখে প্রদক্ষিণ মহিলাদের।

আরামবাগের আসনপুর গ্রামের কাশীনাথ ঘোষের ৭ বিঘা কৃষিজমি আছে। সেখানে এবার সাড়ে চার বিঘা জমিতে তিনি গোবিন্দ ভোগ চালের চাষ করেছেন সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে। রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ছাড়াই জৈব পদ্ধতিতে জমিতে চাষ করেছেন এই কৃষক। তাঁর হাতে লাগানো ধানের চারা এখন লম্বায় প্রায় ৭ ফুট ঠেকেছে। সেই ধানের সুগন্ধ ছড়িয়েছে মাঠজুড়ে।

আরও পড়ুন- মা তারার ভক্তদের জন্য বিরাট সুখবর! খুলে যাচ্ছে দ্বিতীয় তারাপীঠ মন্দির, কোথায়?

জৈব পদ্ধতিতে চাষ করেছেন বলেই সম্প্রতি বৃষ্টির জেরে তাঁর ফসলহানি ঘটেনি। কাশীনাথ ঘোষের কথায়, "এই সম্মানকে প্রকৃত কৃষক সম্মান হিসেবেই দেখছি। প্রতিবেশী রাজ্য অসমের প্রত্যন্ত কিছু গ্রামে এই ধরণের কৃষক পুজো করা হয়। এখানে শুধু আরামবাগেই হয়। জৈব পদ্ধতিতেই চাষ করা উচিত। কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে শরীরের ক্ষতির পাশাপাশি জমিরও ক্ষতি হয়। আমি তাই উল্টো রাস্তায় চাষ করি।"

আরও পড়ুন- মৃত্যু কেড়েছে স্ত্রীর আশা! মা-হারা একরত্তিকে বুকে আগলে সোনালী স্বপ্নের জাল যুবকের

২০২১ সালে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে এই জৈব সার দিয়ে চাষ করার প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন কাশীনাথ। নিজের জমিতে চাষ করে দেশব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছেন এই কৃষক। শুধু ধান চাষই নয়। বাকি জমিতে আলু ও তিল চাষ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন- ফলে গেল সুকান্তের কথাই? ভোটের মুখে বঙ্গে ‘অতি সক্রিয়’ অনুপম বেজায় ফাঁপড়ে!

West Bengal Arambagh hooghly news
Advertisment