মর্মান্তিক। চোর অপবাদে বেধড়ক মারধরে মৃত্যু যুবকের। দড়ি, শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে গণপিটুনির অভিযোগ। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এলাকা উত্তপ্ত থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মৃত যুবক পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন।
হরিশ্চন্দ্রপুরের মালিওর-১ পঞ্চায়েতের পিপুলতলা এলাকায় শুক্রবার রাতে ওই গণপ্রহারের ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মারধেরর পর ওই যুবকের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে পড়ে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎকরা। সেখানেই শনিবার রাতে মৃত্যু হয় পরিযায়ী শ্রমিক ওই যুবকের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম প্রতাপ মণ্ডল। তাঁর বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের মালিওর গ্রামে। প্রতাপ নামে ওই যুবক পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ সেরে মাসখানেক আগেই ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই গোটা এলাকায় থমথমে পরিবেশ। স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধেই প্রতাপ মণ্ডল নামে ওই যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। যুবকের মৃত্যুর পর থেকেই গোটা এলাকা কার্যত পুরুষশূণ্য।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে পিপুলতলায় চুরি করতে আসা এক যুবককে হাতেনাতে ধরা হয়েছে বলে এলাকায় খবর চাউর হয়। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ভিড় জমে যায়। দড়ি দিয়ে যুবকের দুই হাত বেঁধে ফেলা হয়। পা দুটোও লোহার শিকল দিয়ে বাঁধা হয়। তারপরই শুরু হয় গণপ্রহার। বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। খবর পেয়ে ওই যুবকের বাড়ির লোকজন সেখানে ছুটে যান।
আরও পড়ুন- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঙ্গল কামনা, মাহেশের মন্দিরে পুজো মদন মিত্রের
মারধরের পাশাপাশি তাঁর পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে বলে লিখিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মারধে অচেতন অবস্থায় ওই যুবককে প্রথমে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে চাঁচল হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন যুবকের মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয়কুমার দাস জানান, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন মাফিক পদক্ষেপ করা হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন