Pathan wins-Mamata reacts: অধীরগড় বহরমপুরে তৃণমূল কংগ্রেস জিততেই পরাজিত কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নির্বাচনে বহরমপুরে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হন কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। মঙ্গলবার ফলাফল প্রকাশের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেনিয়ে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, অধীর চৌধুরী আসলে 'বিজেপির লোক'।
রাজ্য রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসে থাকাকালীন সময় থেকেই অধীর চৌধুরী তাঁর বিরোধী লবির লোক বলে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতেও প্রকাশ্যে এই দুই নেতা ও নেত্রীর মধ্যে দূরত্ব কমেনি, বরং বেড়েছে। সাম্প্রতিক রাজনীতিতে বামেদের হাত ধরে বাম-কংগ্রেস জোট গড়ে তোলা অধীররঞ্জন এবারের লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে জোটের ভালো ফলের আশা করেছিলেন।
তাঁর বিরুদ্ধে এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলা বিশ্বকাপার ইউসুফ পাঠান (গনি)-কে প্রার্থী করেছিল। গুজরাটের বাসিন্দা ইউসুফের নাম ছিল প্রার্থীতালিকায় বিরাট চমক। তা-ও আবার শক্তিশালী অধীরগড় বহরমপুরে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল। যা শুনে সেই সময় আত্মবিশ্বাসী অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, 'এবার তো হলিউড থেকে প্রার্থী আনবেন।' একইসঙ্গে কংগ্রেস নেতা জানিয়েছিলেন, তিনি এবার জিততে না পারলে রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন।
মঙ্গলবার গণনা শুরু হওয়ার পর বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদ প্রথমদিকে সামান্য ব্যবধানে এগিয়েও ছিলেন। এমনকী পুরো সাপলুডো খেলার মত কখনও দেখা যায় যে অধীর চৌধুরী এগিয়ে, কখনও আবার ইউসুফ পাঠান। কিন্তু, গণনা যতই এগোতে থাকে, দেখা যায় যে অধীর চৌধুরী ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছেন। নবম রাউন্ডের শেষে দেখা যায়, লোকসভায় কংগ্রেসের নেতার চেয়ে ইউসুফ ৩৩,৯৩৪ ভোটে এগিয়ে। ক্রমশ এই ব্যবধান কমার বদলে বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত ইউসুফ পাঠানের কাছে ৮০ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত হন অধীর চৌধুরী।
আরও পড়ুন- দিল্লি যাওয়া আর হল না অধীরের, গুজরাতি পাঠানের হাতেই কাত একদা বহরমপুরের ‘রবিনহুড’
এই পরাজয়ের পর কংগ্রেস নেতা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'বাংলার রাজনীতি ক্রমশ ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। আমরা স্যান্ডউইচ হয়ে গেছি। হিন্দুরাও আমাদের নিজেদের লোক ভাবেনি। মুসলমানরাও না। আমি কোনও অজুহাত দেব না। মানুষ আগে মনে করছিল যে আমাকে জেতানো দরকার। সেই সময় জিতিয়েছিল। এখন মনে করেছে যে আর দরকার নেই, তাই হারিয়ে দিয়েছে।' পালটা জয়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে অধীর চৌধুরী সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ও ভীষণ উদ্ধত। সেই কারণেই মানুষ ওকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ও কংগ্রেসের লোকই নয়। বিজেপির হয়ে কাজ করছিল। সেই জন্য মানুষ ওঁকে হারিয়েছে।' আর জয়ের পর ইউসুফ পাঠান বলেছেন, 'এটা আমার একটা নতুন ঠিকানা হল। আমি গুজরাটেই থাকব। কাজের সূত্রে দিল্লি যাব। আর সময় পেলে এখানে আসব। এখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আমার আত্মীয়তা গড়ে উঠেছে।'