হাড় হিম কাণ্ডে হুলস্থূল পড়ে গিয়েছে থাইল্যান্ড জুড়ে। একটি চিলড্রেন্স ডে কেয়ার সেন্টারে বন্দুকবাজের হামলায় ২২ শিশু-সহ কমপক্ষে ৩৪ জন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নোংবুয়া লাম্পু শহরের কেন্দ্রে থাকা বাচ্চাদের দেখাশোনার কেন্দ্রটিতে হামলা চালায় বন্দুকবাজ। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিযেছে, এক প্রাক্তন পুলিশ কর্মী এই ঘটনা ঘটানোর পর নিজেও আত্মঘাতী হয়েছে।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রাক্তন ওই পুলিশকর্মী এদিন নিজের স্ত্রী-সন্তানকেও খুন করেছে। গত বছরেই পুলিশের চাকরি থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২ বছরেরও কম বয়সী শিশু রয়েছে। কমপক্ষে ৩৪ জন বন্দুক হামলায় নিহত হয়েছে। এরই পাশাপাশি জখম হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের নোংবুয়া লাম্পু শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ওই চিলড্রেন্স ডে কেয়ার সেন্টারে হামলা চালায় বন্দুকবাজ। থাইল্যান্ড-ভিত্তিক ব্যাংকক পোস্টের প্রতিবেদনে বন্দুকধারীর নাম প্রাক্তন পুলিশকর্মী পানিয়া খামরাব বলে জানানো হয়েছে। ওই ব্যক্তি বন্দুক এবং ছুরি নিয়ে এদিন চিলড্রেন্স ডে কেয়ার সেন্টারের ভিতরে ঢুকেছিল।
স্থানীয় পুলিশকে ঊদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পুলিশে চাকরি করাকালীনও ওই ব্যক্তি মাদক সেবন করতেন। মাদকাসক্তির জন্যই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হযেছিল তাঁকে। জানা গিয়েছে, এদিন বাচ্চাদের দেখভাল করার ওই কেন্দ্রটিতে দুপুরের খাবারের সময় ঢুকে পড়েছিল বন্দুকবাজ। সেই সময় সেখানে ৩০টি শিশু ছিল। স্থানীয় এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, প্রথমে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা একজন শিক্ষক-সহ চার বা পাঁচজন কর্মীকে গুলি করেন ওই প্রাক্তন পুলিশকর্মী।
আরও পড়ুন- হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল সেনার হেলিকপ্টার, মর্মান্তিক মৃত্যু পাইলটের
প্রথমে গুলির শব্দকে সবাই আতসবাজির বলে ভেবেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একাধিক ভিডিওয় দেখা গিয়েছে থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রদেশ নং বুয়া লামফুর উথাই সাওয়ান শহরে একটি পুকুরের পাড়ে রক্তাক্ত শিশুদের মৃতদেহগুলি চাদরে ঢাকা অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
বিশ্বের অন্য দেশগুলির তুলনায় থাইল্যান্ডে বন্দুকধারীদের সংখ্যা অনেক বেশি। তবে একটি অংশের মতে, সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকধারীদের পাশাপাশি অবৈধভাবেও বিপুল পরিমাণ ব্যক্তি নিজেদের কাছে বন্দুক রাখেন। তাঁদের কাছে বন্দুক রাখার কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই। থাইল্যান্ডে এর আগেও একাধিকবার বন্দুকবাজের হামলা হয়েছে। তবে বন্দুকবাজের হামলায় এমন মৃত্যু মিছিল দেশে বিরল।
এর আগে ২০২০ সালে সম্পত্তি-চুক্তি জনিত সমস্যার জেরে ক্ষুব্ধ এক সেনাকর্মী আলাদা-আলাদা চারটি জায়গায় হামলা চালায়। ওই সেনাকর্মী এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন ওই চার জায়গায় গিয়ে। ওই ব্যক্তির ছোঁড়া গুলিতে কমপক্ষে ২৯ নিহত হয়েছিলেন। বন্দুকবাজের হামলায় জখম হয়েছিলেন আরও ৫৭ জন।