অত্যাধুনিক বন্দুক হাতে রাস্তায় রাস্তায় তালিবান বাহিনীর ভিড়। পান থেকে চুন খসলেই নিমেষে খতম। বিপন্ন নারী নিরাপত্তা ও অধিকার। এরপরও তালিবান রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নারী অধিকারের দাবিতে রাস্তায় নেমে প্রকাশ্যে আন্দোলনে মহিলা বাহিনী। রীতিমতো প্ল্যাকার্ড হাতে, ধ্বনি তুলে তালিবান শাসনে সমানাধিকারের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। বলছেন, "শরীরের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত অধিকারের দাবিতে লড়ে যাব।"
আফগানিস্তানের পশ্চিমদিকের শহর হেরাট। প্রগতিশীল এই শহরে তালিবান শাসনের পর গত ২০ বছরে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মেয়েরা স্কুল, কলেজে যেতেন। চাকরির জন্য বাড়ির বাইরে বেরতেন। দেশের বুকে আবারও তালিবানরাজের প্রতিষ্ঠার পর সেসব কার্যত অতীত। স্বংয়সম্পূর্ণ মহিলারা আপাতত তালিবান নির্দেশে ঘরবন্দি। যার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন মহিলারা। প্ল্যাকার্ডে লিখে, স্লোগান দিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজের সর্বত্র সমান অধিকারের দাবি জানাচ্ছেন। নিন্দা করেছেন তালিবার শীর্শ নেতা মহম্মদ আব্বাস স্তানেকজাইয়ের মন্তব্যের।
আরও পড়ুন- জল্পনা শেষ, মোল্লা বরাদর-ই নয়া আফগানিস্তান সরকারের প্রধান
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহম্মদ আব্বাস স্তানেকজাই জানিয়েছেন, মহিলাদের নয়া সরকারের কোনও মন্ত্রিত্বের পদ দেওয়া হবে না। কিন্তু, কাবুল দখলের পর পরই তালিবানরা আশ্বাস দেয় যে, রাজনীতি করতে পারবেন আফগান মহিলারা। যোগ্যরা পাবেন শীর্ষ পদ। তবে, স্তানিকজায়ের মন্তব্যে সেই আশ্বাস কার্যত অতীত। উল্টে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের নির্দেশ, স্বাস্থ্যক্ষেত্র ছাড়া আপাতত কোনও আফগান মহিলাই কোনও কাজে যোগ দিতে পারবে না।
আরও পড়ুন- ঘানির দাবি নস্যাৎ আমেরিকার, তালিবদের পাকিস্তানি সহায়তার প্রমাণ নেই- জানাল পেন্টাগন
শুক্রবারই আফগানিস্তানে সরকার গঠন করতে পারে তালিবানরা। তার আগেই অধিকার আদায়ে তালিবান নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণে মরিয়া সেদেশের মহিলারা। দাবি আদায়ে তালিবানদের দেখে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই বলে বলছেন তাঁরা। উল্টে হেরাট থেকেই আন্দোলনের তীব্রতা দেশের ৩৪টা প্রদেশে ছড়িয়ে দিতে চায় বিক্ষোভকারী নারীর দল।
অধিকার আন্দোলন কর্মী বাসিরার কথায়, "মহিলাদের ছাড়া সরকার ভালো করে চলতে পারে না। তালিবানদের এটা বোঝাতে হবে। সমাজের সর্বত্র নারীদের সমানাধিকার চাই। এটাই আন্দোলনের একমাত্র লক্ষ্য।" আন্দোলনের তীব্রতায় তালিবানরা তাঁদের দাবি আদায়ে বাধ্য হবেন বলে আশা বাসিরার।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন