তালিবানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা প্রথম মহিলা আফগান মেয়রের

ভার্চুয়াল বার্তায় তালিবানকে হুঁশিয়ারি দেন, "আফগানিস্তান আমাদের ছিল, আমাদেরই থাকবে।"

ভার্চুয়াল বার্তায় তালিবানকে হুঁশিয়ারি দেন, "আফগানিস্তান আমাদের ছিল, আমাদেরই থাকবে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তালিবানের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহের সুর চড়ালেন আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র জারিফা গাফারি।

কয়েকদিন আগেও তালিবান খুন করতে পারে বলে ভয়ে সিঁটিয়ে ছিলেন। অপেক্ষা করছিলেন কবে তালিবান জঙ্গিরা এসে তাঁকে মেরে ফেলবে। এবার তালিবানের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহের সুর চড়ালেন আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র জারিফা গাফারি। এই মুহূর্তে জার্মানিতে রয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার সেখান থেকেই ভার্চুয়াল বার্তায় তালিবানকে হুঁশিয়ারি দেন, "আফগানিস্তান আমাদের ছিল, আমাদেরই থাকবে।"

Advertisment

মেয়রেরে দাবি, "সাধারণ মানুষ কখনও তালিবানের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি। মুখ বুজে অত্যাচার আগেও সহ্য করেছে, এখনও করছে।" দেশের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বিশ্বের রাষ্ট্রনায়করা আফগানিস্তানের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে তোপ দাগেন জারিফা। তাঁর দাবি, "তালিবান কোনও দিন বদলাবে না। আমি চাই তাদের মুখোশ খুলে দিতে। যাতে ওদের আসল মুখটা সামনে আসুক।"

তালিবানের শক্তিবৃদ্ধি ও মদত দেওয়ার পিছনে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলে দাবি করেছেন জারিফা। দীর্ঘদিন ধরে তালিবানকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, অস্ত্র ও টাকা সরবরাহের জন্য পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের যোগসাজশ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গই উল্লেখ করে জারিফার বক্তব্য, "পাকিস্তানের ভূমিকা খুব স্পষ্ট, আফগানিস্তানের বাচ্চারাও জানে সেটা।"

জারিফা গাফারি, মাত্র ২৭টা বসন্ত পার করেছেন জীবনের। কিন্তু অল্প সময়েই সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছেন। ২০১৮ সালে দেশের কনিষ্ঠতম এবং প্রথম মহিলা মেয়র হয়েছেন ময়দান ওয়ার্দাক প্রদেশের। কিন্তু তালিবানরা মেয়েদের শিক্ষা, সাফল্য, কাজকর্ম পছন্দ করে না। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তো আরও বড় অপরাধ। ১৫ অগস্ট যখন কাবুলও দখল করে ফেলল তালিবানরা, সেইসময় এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার কাছে ভেঙে পড়লেন জারিফা। এমনটা তো তিনি চাননি। শুধু তিনি কেন, কোনও নিরীহ আফগান-ই চাননি।

Advertisment

আরও পড়ুন ‘ফিরলেই মেরে ফেলবে তালিবান’, প্রাণভয়ে বিদেশে আফগান নির্বাচন কমিশনার

তালিবানরা যত অগ্রসর হয়েছে, ততই মৃত্যুভয় গ্রাস করেছে জারিফাকে। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "আমি বসে অপেক্ষা করছি, কখন ওরা আসবে আমাকে মারতে। আমার পরিবারে আমাকে সাহায্য করার কেউ নেই। আমি পরিবার-স্বামীর সঙ্গে বসে আছি। আর ওরা আমার মতো মানুষদের জন্য আসবে আর মেরে ফেলবে। আমি আমার পরিবারকে ছাড়তে পারব না। আমি কোথায় যাব?" তারপরই কথা বন্ধ হয়ে যায় তাঁর।

গত বছর ১৫ নভেম্বর তাঁর বাবা জেনারেল আবদুল ওয়াসি গাফারিকে গুলি করে মারা হয়। তার ২০ দিন আগেই জারিফাকে তৃতীয়বার খুনের চেষ্টা বিফল হয়। তালিবানদের শক্তিবৃদ্ধির ফলে জারিফাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে কাবুলে বিশেষ কাজ দেওয়া হয়। আহত সৈন্য ও নাগরিকদের সেবা করার সুযোগ পান তিনি। সপ্তাহ তিনেক আগে জারিফা বলেছিলেন, "যুবসম্প্রদায় সবই দেখতে পাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছেন তাঁরা। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমার বিশ্বাস, ওরা জাতির অগ্রগতি ও অধিকারের স্বার্থে লড়াই চালিয়ে যাবে। দেশের ভবিষ্যতের আশা এখনও আছে।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Taliban Zarifa Ghafari Afghanistan