বাংলাদেশ ধর্মীয় হিংসা অব্যাহত। রবিবারও ফের একটি হিন্দু মন্দিরে তাণ্ডব চালিয়ে ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতীরা। কুমিল্লার দুর্গামণ্ডপে কোরান অবমাননার অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল বাংলাদেশ। ২২টিরও বেশি জেলায় ছড়িয়েছে হিংসা। ব়্যাব-বিজিবি, আধা সেনা নামিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করতে ব্যর্থ প্রশাসন। হাসিনা সরকার দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়ার নিদান দিলেও অশান্তি থামছেই না। এবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা দেশজুড়ে অনশনের ডাক দিলেন।
হিন্দুদের একটি সংগঠন হিংসার ঘটনায় এই আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছে। এমনটাই খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে। রবিবার ফেনি জেলায়, ঢাকা থেকে ১৫৭ কিমি দূরে একটি হিন্দু মন্দির এবং সংলগ্ন দোকানে ভাঙচুর-লুঠপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। শনিবার তার আগে বাংলাদেশের একাধিক দুর্গাপুজো মণ্ডপে ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ করছিলেন আক্রান্তরা। তারপরই ফের হামলা চলে মন্দিরে। ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিত এই খবর।
সেই হিংসায় অন্তত ফেনি মডেল থানার আইসি নিজামউদ্দিন-সহ ৪০ জন গুরুতর আহত হন। শনিবার রাতে প্রশাসন বিজিবি, আধা সেনা মোতায়েন করে একাধিক মন্দিরে, হিন্দুদের দোকান-ব্যবসার জায়গায়। ভোর রাত ৪.৩০ পর্যন্ত একাধিক এলাকায় চলে ভাঙচুর-লুঠপাট। পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার দুষ্কৃতীরা মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাশুনিয়া ইউনিয়নে ধনিয়াপাড়া মহাশ্মশান কালী মন্দিরে ছটি বিগ্রহ ধ্বংস করে।
এদিকে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বে বন্দর জেলা চট্টগ্রামে বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান একতা পর্ষদের তরফে আমরণ অনশনে বসছেন সংখ্যালঘুরা। আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে এই অনশন শুরু হবে। বাংলাদেশে দুর্গাপুজোয় হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। এই প্রতিবাদ কর্মসূচি ঢাকার শাহবাগ এবং চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় হবে বলে জানিয়েছেন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। এই ফোরাম শনিবার চট্টগ্রামে ছয় ঘণ্টার বনধ পালন করে।
বাংলাদেশের পুজা উদযাপন পরিষদ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে দোষীদের। ফোরামের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত বলেছেন, সরকার তাঁদের দাবি না মানলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, "স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী থেকে শাসকদলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের, প্রত্যেকে বলছেন তাঁরা পুরোটাই জানেন, শুনেছেন। আপনারা যদি সবই জানেন তাহলে দোষীদের শাস্তি দিচ্ছেন না কেন?"
আরও পড়ুন বাংলাদেশে ইস্কন মন্দিরে দুষ্কৃতী হামলা, ‘সুবিচার’ চেয়ে পথে সংখ্যালঘুরা
বাংলাদেশ ইস্কনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, হিন্দু সম্প্রদায় চুপ করে এই হামলা দেখবে না। তিনি বলেছেন, "আমাদের বিশ্বাস মৌলবাদীদের গোষ্ঠী এই ধরনের ঘৃণার উদ্রেক করছে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য। আমরা জানি, শাসকদলের বেশ কিছু সদস্য এই ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন যাঁরা বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ছড়াচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি দূর্বল হবেন না বরং কড়া পদক্ষেপ করুন।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন