ফের ভারত-বিরোধী শক্তির পাশে দাঁড়াল চিন। পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-এ-তইবার ডেপুটি চিফ আব্দুল রেহমান মাক্কিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবকে কৌশলে বাধা চিনের। রাষ্ট্রসংঘে ভারত ও আমেরিকা যৌথভাবে মাক্কিকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিল।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ১ জুন রাষ্ট্রসংঘে ভারত ও আমেরিকা যৌথভাবে পাক জঙ্গি মাক্কির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘে সোচ্চার হয়। পাকিস্তানে থাকা এই জঙ্গি নেতাকে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আল কায়েদা এবং আইএসআইএল নিষেধাজ্ঞা কমিটির অধীনে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব দেয় দুই দেশ। যদিও ইতিমধ্যেই ভারত ও আমেরিকা মাক্কিকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবেই দেশের আইনে তালিকাভুক্ত করেছে।
উল্লেখ্য, আবদুল রেহমান মাক্কি লস্কর-এ-তইবা (এলইটি) ও জামাত-উদ-দাওয়া (জেউডি)-এর রাজনৈতিক বিষয়ক ডেপুটি আমির ও প্রধান। মাক্কি লস্করের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান হিসেবেও কাজ করেছে। কুখ্যাত এই জঙ্গি নেতা শুরার (শাসক সংস্থা) সদস্য এবং একইসঙ্গে জামাত-উদ-দাওয়ার কেন্দ্রীয় এবং ধর্মান্তরিত দলের একজন সদস্য। সম্পর্কে এই মাক্কি হল লস্কর প্রধান হাফিজ সইদের শ্যালক। সইদকে ইতিমধ্যেই সন্ত্রসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাষ্ট্রসংঘ।
আরও পড়ুন- কড়া নাড়ছে চতুর্থ ঢেউ? লাগাতার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আশঙ্কার পারদ চড়ছে
সূত্র জানাচ্ছে, মাক্কি জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য তহবিল সংগ্রহ, মৌলবাদীকরণ এবং নাশকতার জন্য যুবকদের নিয়োগের দায়িত্বে রয়েছে। ভারতে বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীরে একাধিক হামলার মাস্টার মাইন্ড হল এই মাক্কি। হাফিজ সইদের শ্যালক মাক্কি লস্কর ও জামাত-উদ-দাওয়ার শীর্ষস্থানীয় পদে থাকার সময়েই লস্কর-এ-তইবা ভারতে ২৬/১১-এর মুম্বই হামলা, ২০০০-এর ২২ ডিসেম্বর লাল কেল্লায় হামলা, রামপুরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে হামলার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এই সব হামলার নেপথ্যে রয়েছে এই মাক্কি। এছাড়াও উপত্যকার একাধিক নাশকতার সঙ্গে সরাসরি যোগ এই মাক্কির।
এহেন সন্ত্রাসবাদী আব্দুল রেহমান মাক্কিকে ২০১৯-এর ১৫ মে গ্রেফতার করে পাকিস্তান সরকার। লাহোরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল মাক্কিকে। পরের বছর সন্ত্রাসমূলক কাজে টাকার জোগান দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয় মাক্কি। পাকিস্তানের একটি আদালত তাকে কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন- দ্বাদশের সিলেবাস থেকে বাদ গুজরাট দাঙ্গা, NCERT-র সিদ্ধান্তে তুমুল বিতর্ক
কুখ্যাত এই জঙ্গি নেতার ভয়ঙ্কর এই পরিচয়ের পরেও উল্টে তারই পাশে দাঁড়াল চিন। স্বভাবতই চিনের এই সিদ্ধান্তে হতাশ ভারত। একটি সূত্রের মতে, ''মাক্কির বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য প্রমাণ রয়েছে। চিনের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যে দাবি চিন করছে, তার সঙ্গে তাঁদের এই সিদ্ধান্তের মিল নেই।'' তবে চিনের এই পদক্ষেপ এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক সন্ত্রাসবাদীকে জঙ্গি তালিকাভুক্ত করতে বাধা দিয়েছে চিন। এর আগে পাকিস্তান-ভিত্তিক এবং রাষ্ট্রসংঘের নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেএম)-এর প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় ফেলতেও চিন বাধা দিয়েছিল।