Advertisment

ধ্বংস হয়েছে স্কুল, নিশ্চিহ্ন হাসপাতাল, ইউক্রেন জুড়ে শুধুই হাহাকার!

সাধারণ বসতি অঞ্চলের ১৫০০টি বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে রুশ বাহিনী। দেশের ৯০০টি গুরুত্বপূর্ণ ভবনের জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
russia ukrain live updates

রাশিয়া দাবি করেছে যুদ্ধের কারণে তাদের ১,৩৫১ জন সেনা নিহিত হয়েছেন।

উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছিল। অবশেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। বুধবার ১৪ দিনে পড়ল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War) রাজধানী কিয়েভ, অন্যতম বড় শহর খারকভ-সহ ইউক্রেনের বিরাট অংশে কেবলই ধ্বংসের ছবি। যুদ্ধ যে কোনও সমাধান নয়, ফের প্রমাণ হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। একদিকে যেমন রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হানায় ইউক্রেনের বহু সরকারি ভবন, অসামারিক বসতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তেমনই দু’পক্ষের অসংখ্য মানুষের (সামরিক ও অসামরিক) মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে কার্যত ‘মৃত্যুপুরী’ ইউক্রেন। ক্ষতবিক্ষত ইউক্রেন থেকে পালিয়ে বাঁচার করুন আর্তি উঠে এসেছে সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে।

Advertisment

সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে রুশ হামলায় কিয়েভের পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি স্কুল ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যদিও এই হামলায় প্রাণহানীর খবর নেই। একটি পরিসংখ্যান বলছে, তেরোদিনের যুদ্ধে ২০২টি স্কুল, ৩৪টি হাসপাতাল নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সাধারণ বসতি অঞ্চলের ১৫০০টি বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে রুশ বাহিনী। দেশের ৯০০টি গুরুত্বপূর্ণ ভবনের জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।

রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, যুদ্ধে ৪০৬ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৮ জন শিশু। গুরুতর আহতের সংখ্যা ৮০১। যদিও মৃতের প্রকৃত সংখ্যা অনেকটাই বেশি বলে মনে করা হচ্ছে রাষ্ট্রসংঘের তরফেই। এদিকে ইউক্রেনের দাবি, ১২ হাজার রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে পালটা মারে। এছাড়াও পুতিনের সেনার ২ হাজার সামরিক সরঞ্জামের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২৮৫টি ট্যাঙ্ক, ৪৪টি যুদ্ধবিমান ও ৪৮টি কপ্টার। যদিও মস্কোর দাবি, ৪৯৮ জন রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫৯৭ জন। এখনও অবধি কতজন ইউক্রেনীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে তা কোনওপক্ষই জানায়নি। জেলেনস্কির সেনার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়িটও স্পষ্ট নয়।

এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, ‘মৃত্যুপুরী’ ইউক্রেন ছেড়েছেন ১৭ লক্ষ মানুষ। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সঙ্কট বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, এর মধ্যে পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১২ লক্ষ ছিন্নমূল মানুষ। আশ্রয়ের খোঁজে রোমানিয়ায় চলে গিয়েছেন ৩ লক্ষ ঘরছাড়া।
এদিকে রুশ আগ্রাসনের মুখে পড়ে সুমিতে আটকে পড়েছিলেন অসংখ্য ভারতীয় পড়ুয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের শহর সুমিতে আটকে পড়া সব ভারতীয় ছাত্রদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য অপারেশন গঙ্গার অধীনে বিমানগুলিও প্রস্তুত রয়েছে। মঙ্গলবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এমনই জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন: রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস নেবে না আমেরিকা, বড় ঘোষণা বাইডেনের

টুইটে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি লিখেছেন, ”এটা জানাতে পেরে আনন্দিত যে আমরা সুমি থেকে সমস্ত ভারতীয় ছাত্রদের সরিয়ে দিতে পেরেছি। তাঁরা বর্তমানে পোলতাভার পথে রয়েছেন। যেখান থেকে তাঁরা পশ্চিম ইউক্রেনের ট্রেনে উঠবেন। তাঁদের বাড়িতে আনার জন্য অপারেশন গঙ্গার অধীনে বিমানগুলিও তৈরি রয়েছে।”
উল্লেখ্য, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেও অনবরত রুশ গোলাবর্ষণ জারি ছিল সুমিতে। ভারতীয় পড়ুয়াদের সুমি থেকে উদ্ধারে পদে পদে বেগ পেতে হয়েছে কেন্দ্রকে। এক সময় সুমি থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধার নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেন। মোদীর সেই আলোচনার পরেই জট কাটে।
সেই সঙ্গে রাস্ট্রসংঘের রিপোর্ট ঘিরেও বাড়ছে উদ্বেগ। রাস্ট্রসংঘ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ। সেই সংখ্যা ৪০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে রাস্ট্র সংঘ। অন্যদিকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে এর ফলে ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিপন্ন হওয়ার এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

Russia-Ukraine Conflict Damage list of ukraine
Advertisment