ইউক্রেনের অবস্থা যাই হোক, রাশিয়ার বিরুদ্ধে থাকবে না ভারত। গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়েছে। তারপর থেকে বহুবার রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ হয়েছে। কিন্তু, কোনও প্রস্তাবই সমর্থন করেনি ভারত। শুক্রবারও সমর্থন করল না এমনই এক প্রস্তাব। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পরিষদে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে মানবাধিকার ভঙ্গের অভিযোগে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব পেশ হয় শুক্রবার। সেই প্রস্তাবেই শুক্রবার বিরত থাকল ভারত।
Advertisment
৪৭ সদস্যের এই মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইংল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ৩২টি দেশ। বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে কেবলমাত্র রাশিয়া এবং এরিত্রিয়া। ভোটদানে বিরত থেকেছে ভারত, চিন, পাকিস্তান, সুদান, ভেনেজুয়েলার মতো ১৩টি দেশ। ভারত আগেই স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেবে না। সম্প্রতি, রাষ্ট্রসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেও ভারত ভোটদানে বিরত ছিল। আবার, রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভাতেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভারত ভোট দেয়নি।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যাবে না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এটা ভারতের সুস্পষ্ট নীতি। দীর্ঘদিনই ভারত এবং রাশিয়া পরস্পরের অবিচ্ছেদ্য মিত্র। এমনিতে ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের জন্যে ভারতের সহানুভূতি আছে ঠিকই। সেজন্য, অবিলম্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিও করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে দেখলে ইউক্রেনের সঙ্গে ভারতের বৈরিতা দীর্ঘদিনের।
কারণ, কাশ্মীর ইস্যুতে ইউক্রেন ভারতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘে ভোট দিয়েছে। ১৯৯৮ সালে পোখরানে পরমাণু পরীক্ষা ইস্যুতেও রাষ্ট্রসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে ইউক্রেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ প্রাপ্তির বিরুদ্ধেও ভোট দিয়েছে ইউক্রেন। শুধু তাই নয়, ইউক্রেন ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে ১০০টি টি-৮৪ অপলট মেইন ব্যাটল ট্যাংক দিয়েছে। পাকিস্তান যার নাম রেখেছে, আল খালিদ ট্যাংক। পাশাপাশি, আল কায়েদাকে সমর্থন করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের কাছে ইউরেনিয়ামের ভাণ্ডার থাকলেও তা কখনও ভারতকে সরবরাহ করেনি। ইউক্রেনের সম্পর্কে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবস্থান স্পষ্ট করতে, এই বিষয়গুলোও মাথায় রাখছে নয়াদিল্লি।