প্রবল বর্ষায় বন্যা কবলিত চিনের একাধিক প্রদেশ। বিশেষত গ্রাম্য পরিসরে বন্যা এবং প্লাবনে দুর্বিসহ অবস্থা মানুষের। চিনের হেনান প্রদেশের জিনসিয়াং গ্রামে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃতের সংখ্যা। সূত্র অনুযায়ী, অত্যধিক বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে চারিদিক। একটি ট্রাফিক টানেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চারটি মৃতদেহ। ঝেংঝৌউ প্রদেশে অত্যধিক বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের।
মধ্য চিনে প্রায় তিন দিন ভূগর্ভস্থ গ্যারেজে আটক থাকার পর উদ্ধার করা হয়েছে ঝেংঝৌউয়ের জিনশুই জেলার লি ইয়ংশেং-কে। জানা যায়, বন্যার সময় নিজেকে বাঁচাতেই ভাসমান গাড়ি দ্বারা বেষ্টিত একটি বায়ুপ্রবেশকারী নালীর উপরে শুয়ে পড়েন তিনি। তখন থেকেই ভিতরে আটকা পড়ে যান। গভীর জলে নেমে উদ্ধারকারীরা তাঁকে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন। শারীরিক অবস্থা বুঝে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঝেংঝৌউয়ের সাবওয়ে টানেলটিও প্লাবিত হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ১২টি মৃতদেহ, জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয় তাঁদের। রেল পরিষেবা বন্ধ ছিল প্রায় ৪০ ঘণ্টার মতো। তবে, সাধ্যমতো পরিশ্রম করছেন উদ্ধারকারীরা। জলের নিচে থাকা মানুষদের বাইরে বের করে নিয়ে আসতে বুলডোজার, রাবার বোট নিয়ে সর্বদা সচেষ্ট তাঁরা।
আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছে, কমে গিয়েছে বৃষ্টি। তবে, ঝেংঝৌ, হেবি, সিনসিয়াং এবং আনিয়াং প্রদেশের অনেক অংশই এখনও জলের নিচে। সূত্র অনুযায়ী, ঝেংঝৌউয়ের জিঙ্গুয়াংগ প্রদেশের টানেল থেকে মৃতদেহের সঙ্গে ২০০টির বেশি গাড়ি পাওয়া গেছে। এত মৃত্যু এর আগে এই শহরে দেখা যায়নি বলেই জানা গিয়েছে। টানেলটি জলের প্রায় ৪৩ ফুট গভীরে ডুবে যায়, পাম্পের সাহায্যে বের করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ জল।
আরও পড়ুন ভয়াবহ বন্যায় ডুবল পশ্চিম ইউরোপ, মৃতের সংখ্যা ১৫০ ছাড়াল
তবে, বেশিরভাগ জায়গায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রক প্রতিবেশী প্রদেশ থেকে ৩০০ জনের ড্রেনেজ উদ্ধারকারীর দল কাজে নিযুক্ত করেছে। কিছু কিছু রাস্তায় হাঁটুজল থাকলেও তা পাম্প দ্বারা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে নানান ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিছু জরুরি পরিষেবা যেমন অনেক অঞ্চলেই এখনও বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের পরিষেবা মসৃণ হয়নি। ধীরে ধীরে পুরনো রূপ ফিরে পাচ্ছে শহরের নানান প্রান্ত।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন