ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে গণপিটুনি-পুড়িয়ে খুন শ্রীলঙ্কার নাগরিককে। গোটা বিশ্বের লজ্জায় মাথা কাটা গেছে পাকিস্তানের। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে লজ্জার দিন বলে আক্ষেপ করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু পড়শি দেশ তথা গোটা বিশ্ব পাকিস্তানে মৌলবাদীদের দৌরাত্ম্যে ক্ষুব্ধ। ড্যামেজ কন্ট্রোলে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে ফোন ঘোরালেন ইমরান। আশ্বাস দিলেন, দোষীদের উচিত শাস্তি দেওয়ার।
গত শুক্রবার দিনের আলোয় প্রকাশ্যে শ্রীলঙ্কার নাগরিক প্রিয়ন্ত কুমারা দিয়াওয়াদানাকে পিটিয়ে তারপর জ্যান্ত পুড়িয়ে মারে উন্মত্ত জনতা। তার বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ এনে চড়াও হয় জনতা। শিয়ালকোটের এই ঘটনায় শিউরে উঠেছে পাকিস্তানের সুশীল সমাজ-সহ গোটা দুনিয়া। পাকিস্তানে মৌলবাদীদের দৌরাত্ম্য এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে প্রকাশ্যে নারকীয় হত্যালীলা চালাতে কারও হাত কাঁপেনি।
আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠতেই ইমরান শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে ফোন করে জানান, এই ঘটনায় ১১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দোষীদের কোনও রেয়াত না করে উচিত শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ইমরান। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে ঘটনার ভিডিও এবং যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
শুক্রবার এই নারকীয় হত্যার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের মৌলবাদী দল তেহরিক-এ-লাবাইক পাকিস্তান। কাপড়ের কারখানায় জেনারেল ম্যানেজার পদে কর্মরত প্রিয়ন্তকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তারপর আধমরা অবস্থায় গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিচারের জন্য পাক সরকারের উপর ঘরে-বাইরে চাপ আসতেই ৮০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। গ্রেফতার হয় ১১৮ জন। এদের মধ্যে ১৩ জন মূল অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন লজ্জার একশেষ! তিন মাস বেতন নেই, পাক দূতাবাস কর্মীদের নিশানায় ইমরান খান
প্রিয়ন্ত শিয়ালকোটের এই কারখানায় ৯ বছর ধরে কাজ করছিলেন। শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে শনিবার এই হত্যার তীব্র নিন্দা করেছে। উল্লেখ্য, ইসলাম অবমাননার অভিযোগে গণপিটুনি, হত্যা অহরহ ঘটছে পাকিস্তানে। যেখানে এই ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। গত ২০১৭ সালে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে অনলাইন পোস্টের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মাশাল খানকে এইভাবেই গণপিটুনিতে হত্যা করে উন্মত্ত জনতা। কোরান অবমাননার অভিযোগে এক খ্রিস্টান যুগলকে ২০১৪ সালে পাঞ্জাব প্রদেশে পিটিয়ে মারার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন