Advertisment

জেল মুক্ত তালিবানদের হুমকি, প্রাণভয়ে আফগান মহিলা বিচারকরা, দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টা

তালিবানদের দখলে আফগানিস্তান। মুক্ত করা হয়েছে জেলবন্দি দাগী অপরাধী ও জঙ্গিদের। আর তাতেই শিউরে উঠছেন সেদেশের মহিলা বিচারপতি ও আইনজীবীরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Afghan blast At least 100 dead wounded many

আফগানিস্তানের পতাকা

তালিবানদের দখলে আফগানিস্তান। মুক্ত করা হয়েছে জেলবন্দি দাগী অপরাধী ও জঙ্গিদের। আর তাতেই শিউরে উঠছেন সেদেশের মহিলা বিচারপতি ও আইনজীবীরা। প্রাণ ভয়ে ওঁদের অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। যাঁরা আটকে রয়েছেন আফগানভূমিতে তাঁরাও এখন পালানোর চেষ্টা করে চলেছেন। যেসব জঙ্গি বা অপরাধীদের তাঁরা জেলে পাঠিয়েছিল, ছাড়া পেয়েই তাদের নিশানায় এইসব মহিলা বিচারপতি বা আইনজীবীরা। যেকোনও মুহূর্তে প্রাণহানী হতে পারে বলে আশঙ্কা মহিলা বিচারপতি বা আইনজীবীদের।

Advertisment

প্রায় ২৫০ জন আফগান মহিলা বিচারপতি ছিলেন। তালিবানি শাসনে কায়েম হতেই তাঁদের অনেকেই গত ১৫ দিনে দেশ ছেড়েছেন। বাকিরাও ব্যক্তিগত বা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে দেশ ছাড়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। আপাতত তালিবানদের থেকে বাঁচতে এঁদের বেশিরভাগই লুকিয়ে রয়েছেন। কিন্তু এইভাবে আর কতদিন থাকবেন? প্রশ্ন তাঁদের।

আরও পড়ুন- ‘শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ব’, তালিবানরাজ উপেক্ষা, অধিকারের দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় আফগান মহিলারা

মহিলাদের স্বাধীনতা থাকবে। জানিয়েছে তালিবানরা। কিন্তু, তা কার্যকর করার তেমন ইঙ্গিতত মেলেনি। উল্টে মহিলাদের সব ধরণের কাজে যেতে নিষেধ করেছে এই জঙ্গির দল। বেশ কিছু মহিলা অত্যাচারের ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। আফগানিস্তানে আবারও তালিবান শাসনে মহিলা নিরাপত্তা ও অধিকার প্রশ্নের মুখে। তার মধ্যেই অধিকার আদায়ের দাবিতে হেরাট সহহ সেদেশের নানা শহরেরাস্টায় মেনেছেন মহিলা। প্ল্যাকার্ড হাতে, স্লোগান দিয়ে চলছে বিক্ষোভ।

ইন্চটারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ওমেন জাজেস সংগঠনের উদ্যোগে কাবুল থেকে ইউরোপে পালাতে সক্ষম নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আফগান মহিলা বিচারপতির বর্ণনায় উঠে এসেছে ভয়াভয় অবস্থার কথা। তাঁর কথায়, "তালিবানরা এসেই অপরাধী ও জঙ্গিদের মুক্ত করে দিয়েছে। এতেই চরম ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মহিলা বিচারকদের প্রাণ বিপন্ন। কাবুলের আমার বাড়িতে চার তালিবান এসে খোঁজখবর করেছিল। এদেরই আমি জেলবন্দির নির্দেশ দিয়েছিলাম। আমি কোথায় জিজ্ঞাসা করছিল।"

আফগানিস্তানে রয়ে গিয়েছেন এমন অনেক মহিলা বিচারপতির সঙ্গে বর্তামানে ইউরোপবাসী এই মহিলা বিতারপতির যোগাযোগ রয়েছে। তিনি জানান, আমার বন্ধুদের কাছ থেকে তালিবান শাসনের গল্প শুনে শিউরে উঠছি। পরিস্থিতি ভয়াবহ। ওদের প্রাণসংশয় রয়েছে। পালাতে না পারলে নিশংসভাবে মৃত্যু ছাড়া উপায় নেই। 'কেউ পালাতে পারবে না' বলে সরাসরি জঙ্গিরা হুমকি দিচ্ছে। বাদ যাচ্ছেন না মহিলা আইনজীবী ও পুলিশ কর্মীরাও।

আরও পড়ুন- জল্পনা শেষ, মোল্লা বরাদর-ই নয়া আফগানিস্তান সরকারের প্রধান

গত সপ্তাহেই আফগানিস্তান থেকে ৯ জন মহিলা বিচারপতিকে উদ্ধার করা হয়েছে। জানিয়েছেন, ব্রিটিশ আইনমন্ত্রী রবার্ট বাকল্যান্ড। তাঁর কথায়, "২০ বছর আগে তালিবান শাসন শেষের পর দেশে আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় এই সব মবিলা বিচারপতিদের অবদান অনস্বীকার্য। ফের তালিবানরা ক্ষমতা দখল করার পর তাঁদের প্রাণই বিপন্ন।"

মানবাধিকার কর্মীদের একাংশের মত, পশ্চিমী দেশগুলি তাদের নিজেরে দেশের লোকেদের আপগানিস্তান থেকে নিয়ে যেতে এতটাই মরিয়া ছিল যে সেদেশের মহিলা বিচারপতি বা আইনজীবীদের নিয়ে যাওয়ার কথা তেমনভাবে আগ্রহই দেখায়নি। বেলফাস্ট স্থিত এক মানবাধিকার কর্মী সারহা কে আপাতত আফগান মহিলা বিচারপতিদের সেদেশ থেকে অন্যত্র সরাতে সচেষ্ট। অনলাইনে কাজ করে চলেছেন তিনি। বলছিলেন যে, "গত দু'সপ্তাহে এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করলে সমস্যা হত না।"

Read in English

ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন

Kabul Afghanistan Taliban Afghanisthan Crisis Afghanisthan Update
Advertisment