ইউক্রেন সংকট ঘিরে ঘনীভূত যুদ্ধের পটভূমিতে টেলিবৈঠক বেছে নিল রাশিয়া ও আমেরিকা। জটিল এই পরিস্থিতি থেকে সমাধানসূত্র খুঁজতে বৈঠক করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৈঠকে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে। পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের তির বর্ষণ হয়েছে। তবে, তার মধ্যেও শান্তির পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন বিশ্বের মহাশক্তিধর দেশের দুই রাষ্ট্রনায়কই।
ঠান্ডা যুদ্ধের পরবর্তী অধ্যায়ে ইউক্রেন সংকট ঘিরে ফের রুশ-মার্কিন সম্পর্ক এখন তলানিতে। ইউক্রেন ন্যাটোর হাত ধরবে। তা ঠেকাতে প্রাক্তন সোভিয়েত-সঙ্গীর বিদেশনীতিতে হস্তক্ষেপে মরিয়া রাশিয়া। ক্রেমলিনে পুতিনের কক্ষে ঘনঘন বৈঠকের পর ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সৈন্য মোতায়েন করেছে মস্কো। সঙ্গে মোতায়েন হয়েছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। যা দেখে যুদ্ধসংকটে উদ্বিগ্ন ইউক্রেন-সহ গোটা ইউরোপ।
পরিস্থিতি দেখে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে কূটনীতিকদের আগেই সরানো শুরু করেছিল ওয়াশিংটন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁর মস্কো সফর ব্যর্থ হওয়ার পর কিয়েভ দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বাইডেন প্রশাসন। কিয়েভ দূতাবাসের বাছাই কর্মীদের নিরাপদ দূরত্বে সরাতে ইউক্রেনেরই পোল্যান্ড সীমান্তে নতুন দূতাবাস তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনকে রক্ষা করতে ওই অঞ্চলের দেশ রোমানিয়ায় সেনা সংখ্যা বাড়িয়েছে ন্যাটো। বাড়ানো হয়েছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রও।
আরও পড়ুন- সতর্ক প্রশাসন, কাল থেকেই উদুপির স্কুলগুলির আশেপাশে ১৪৪ ধারা
এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শুক্র এবং শনিবার মার্কিন সামরিক ঘাঁটি পেন্টাগন কাটিয়েছে চূড়ান্ত ব্যস্ততায়। একের পর এক কমান্ডকে ন্যাটোর সঙ্গী হিসেবে বড় যুদ্ধের মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে, হোয়াইটস হাউসের ওয়ার রুম থেকে বিশ্বের প্রথমসারির রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে টেলিবৈঠক সেরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে তিনি গত সপ্তাহেই মুখোমুখি বৈঠক করেছেন। টেলিফোনে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড থেকে অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও বৈঠক সেরে ফেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সঙ্গে ওয়ার রুমে চলেছে শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিবিদ এবং সেনাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক। আর, তারপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়, ইউক্রেন আক্রমণ করলে রাশিয়া সমুচিত জবাব পাবে।
আরও পড়ুন- দ্বিতীয় দফার ভোটপ্রচারেও কংগ্রেস-বিজেপির মুখে সেই পুরনো বুলি
মার্কিন প্রশাসনের এই বিবৃতির পরই নড়েচড়ে বসে রাশিয়া। ক্রেমলিন থেকে প্রথমে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আর তারপর হোয়াইট হাউসে বিশেষ টেলিফোন আসে। সূত্রের খবর, বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমের পুতিন মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ উন্মাদনার অভিযোগ পর্যন্ত আনেন। পালটা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ইউরোপ এবং সংলগ্ন এলাকায় শান্তি ভঙ্গের চেষ্টার অভিযোগ আনেন রুশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
তবে, এই অভিযোগ আর পালটা অভিযোগ শেষেও আলোচনা বন্ধ হয়নি। উভয় রাষ্ট্রনেতার মধ্যে দীর্ঘক্ষণ কথা চলে। ইউক্রেন ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের আলোচনা হয়েছে বলেই হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর। বৈঠক শেষে মস্কোও বিবৃতি জারি করেছে। জানিয়েছে, ইউক্রেন পরিস্থিতিতে উত্তেজনা কমিয়ে শান্তি ফেরানোর পথে অগ্রগতি ঘটেছে।
Read story in English