এখনও গোলা-বারুদের গন্ধ নেই। তবুও, যেন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। কয়েকদিন আগেই ধারাবাহিক সাইবার হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ইউক্রেন। অভিযোগ উঠেছিল রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এবারের আঘাতটা যেন পড়েছে ইউক্রেনের অর্থনীতির ওপর। লক্ষ্যে সফল মস্কো। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের অর্থনীতি রাশিয়া দুর্বল করে দিয়েছে।
প্রথম বড় আঘাতটা এসেছিল সোমবার। ওই দিন ইউক্রেনের দুটি বিমানসংস্থা জানিয়ে দেয়, তারা বিমান চলাচলের জন্য বিমা করতে পারছে না। কারণ, কোনও বিমা সংস্থাই ইউক্রেনের বিমানের জন্য বিমা করতে রাজি হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে, বিমান চলাচল বজায় রাখতে ইউক্রেন সরকারকে তড়িঘড়ি ৫৯ কোটি ২০ লক্ষ মার্কিন ডলারের বিমা তহবিল তৈরি করতে হয়।
জমি-বাড়ির ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজধানী কিয়েভে বাড়িভাড়া নেওয়া থেকে জমি অথবা বাড়ির বেচাকেনা- সব থমকে। নভেম্বরে রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে প্রথমে সেনা মোতায়েন শুরু করে। তখন থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছিল। আর, এখন শুধুই স্তব্ধতা।
সব মিলিয়ে একটা চরম আতঙ্কে রাজধানী কিয়েভ-সহ ইউক্রেনের সর্বত্র। ভয়টা, এই যে কখন কী হয়। আর, এই ভয়েই থমকে ইউক্রেনের অর্থনীতি। যা চলছে, সেটা শুধু জরুরি পরিস্থিতিতে চলা, বলাটাই ভালো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে ইউক্রেন সীমান্তে ১ লক্ষ ৯০ হাজার রুশ সেনা মোতায়েন আছে। ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছে, যে কোনওদিন রাশিয়া হামলা চালানো শুরু করতে পারে। হামলায় অন্ততপক্ষে হাজার দশেক ইউক্রেনবাসীর আহত কিংবা নিহত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আরও পড়ুন- গরু পাচার কাণ্ডে ED-র জালে এনামুল
আর, এখন এই ভয়েই সিঁটিয়ে আছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। ২০১৪ থেকেই ইউক্রেনকে এভাবেই যেন ধ্বংস করার খেলায় মেতেছে রাশিয়া। আর, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেন বুঝিয়ে দিলেন, গোলা-বারুদ না-চালিয়েও তিনি ইউক্রেনের অর্থনীতিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিতে পারেন।
কিয়েভে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল স্তব্ধ। কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবাহিনী অতিরিক্ত সক্রিয় হতেই ইউক্রেনের বেশিরভাগ বন্দরে বাণিজ্য স্তব্ধ হয়ে গেছে। ইউক্রেনের কারখানাগুলো চলছে না-চলার মতোই। সবমিলিয়ে যেন এক অনিশ্চিত দুনিয়ায় প্রবেশের মুখে ইউক্রেন। যেখানে স্থিতাবতা, ব্যবসা এবং অর্থনীতি কোনওটাই চলে না।
Read story in English