একনাগাড়ে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধের আতঙ্কে অনেকে দেশ ছেড়েছেন। অনেকে রয়ে গেছেন দেশেই। এদিকে টানা হামলার জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ইউক্রেন। আগামীদিনে খাদ্য-সঙ্কটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে একাধিক ফুড প্রোডাক্টের সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেন
ইউক্রেন সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, মাংস, ওটস, চিনি, নুন, বাজরা, জোয়ার, ভুট্টার মতো সামগ্রী রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, গম, পোলট্রি, ডিম, তেল- ইত্যাদি অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন সাপেক্ষে রফতানি করা যাবে।
এদিকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে আশঙ্কায় একাধিক দেশ। কারণ, এই দুই দেশ থেকে বিশ্বজুড়ে ৩০ শতাংশ গম সরবরাহ হয়। উল্লেখ্য, রাশিয়া বিশ্বে গম রফতানির নিরিখে প্রথম স্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন রয়েছে চতুর্থ স্থানে। কাজেই এই দুটি দেশ অনেকটা গম সরবরাহ করে বিভিন্ন দেশে। প্রসঙ্গত, আমেরিকার সংবাদ মাধ্যম অনুযায়ী, ইউক্রেনের বিভিন্ন সুপার মার্কেটে সামগ্রীর অভাব দেখা দিয়েছে। কারণ, যুদ্ধের জেরে সাপ্লাই রুট কঠিন হয়ে গেছে।
রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়াতে চলেছে আমেরিকা ও তার ইউরোপীয় জোটসঙ্গীরা। পদক্ষেপ করতে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে বিষয়টি উত্থাপনও করা হয়েছে। জানিয়েছেন ইউএস সেক্রেটরি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
ইউরোপের দেশগুলির বেশিরভাগই অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভর করে। তবে গত ২৪ ঘন্টায় রাশিয়ান পণ্য নিষিদ্ধ করার ধারণাটি আরও জোড়াল হয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
রাশিয়ার নাগাড়ে আক্রমণে বিধ্বস্ত ইউক্রেন। এবার ইউক্রেনের সুমিতে রুশ হামলা। এই শহরে এখনও আটকে প্রায় ৭০০ ভারতীয় পড়ুয়া। ভারতীয়দের উদ্ধারে পোলটাভা শহরে তৈরি হয়েছে সেফ করিডর। এবার সেই সেফ করিডর নিয়েও ক্ষুদ্ধ দিল্লি। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে গত ১২ দিনে ২০ হাজারেরও বেশি নাগরিককে উদ্ধার করেছে ভারত। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এমনটাই জানালেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি।
তবে সুমি শহরে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের সেফ করিডর করে উদ্ধারের আর্জি জানিয়েছিল ভারত। এমনকী জেলেনস্কি এবং পুতিন, দুই রাষ্ট্রনেতাকেই ফোনে সেই আবেদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেফ করিডর করা হয়নি। রাষ্ট্রসংঘে তা জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি। অন্যদিকে, দেশ ছাড়ার অপেক্ষায় এখনও খারকিভ স্টেশনে হাজার হাজার মানুষের ভিড়।
আরো পড়ুন:সুমিতে পড়ুয়াদের জন্য সেফ করিডর করা হয়নি, রাষ্ট্রসংঘে অসন্তোষ প্রকাশ ভারতের
সংবাদ সংস্থা এপি-র রিপোর্টে উল্লেখ, যুদ্ধের ১১ দিনেই ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন ১৫ লক্ষ মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবথেকে বড় মানব সঙ্কট, রিপোর্টে দাবি সংবাদসংস্থা এপি-র।
ইউক্রেনে এখনও নির্বিচার গুলি ও লাগাতার বোমাবর্ষণ চলছে। মিসাইল হামলায় ধ্বংসস্তূপে বিমানবন্দর। ধুলিসাৎ একের পর এক জনপদ। রুশ হামলার মুখে ইউক্রেনের প্রত্যাঘাতও চলছে। রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধ চলছে ১২ দিন ধরে। ক্রমশ ধ্বংসের উপত্যকায় পরিণত হচ্ছে সাজানো-গোছানো দেশ ইউক্রেন। জন্মভূমি ছেড়ে পালাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইউক্রেনের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে বিপর্যস্ত করতে দু’দিন আগেই, জাপোরিজিয়ায় পরমাণু কেন্দ্রের দখল নেয় রাশিয়া। শনিবার ইউক্রেনের কানিভে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কার্যত রুশ সেনার দখলে।