'যখন রাশিয়ার ট্যাংক ঢুকছে, তখন আমরা সুমি ছাড়ছি।' মুম্বই এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়েই একথা বলছিলেন ইউক্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া এক ভারতীয় ছাত্র। মুম্বই পৌঁছেছেন কিন্তু, ইউক্রেনের ভয়াবহ দিনগুলো এখনও পিছু ছাড়েনি ওই ভারতীয় পড়ুয়াদের। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ কেমন হয়, ইউক্রেনের শেষ ১২ দিন তা হাড়েহাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছে তাঁদের। অপারেশন গঙ্গা-য় উদ্ধার পেয়েছেন। কিন্তু, দুঃসহ স্মৃতি ভোলা সহজ নয়। বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে এক পড়ুয়া তাই বলে চললেন, 'ইউক্রেন আর রাশিয়ার সেনাকে পথে দেখা যাচ্ছিল। সব জায়গায় ধ্বংসস্তূপের ছবি।'
ইউক্রেন থেকে ফেরা পড়ুয়াদের এই দলেই ছিলেন নামিরা সেলিম শেখ। ইউক্রেনের এক মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রটিকে নিয়ে যেতে বাড়ির লোকজন এসেছিলেন মুম্বই বিমানবন্দরে। সুমির যে পড়ুয়ারা ভিডিওর মাধ্যমে তাঁদের উদ্ধারের জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছিল, তার মধ্যে নামিরাও ছিলেন। ওই পড়ুয়া বলছিলেন, 'আমরা যখন সুমি থেকে বেরোচ্ছি, ইউক্রেনের বাসিন্দারা ধেয়ে এসেছিল। সেই সময় রুশ ট্যাংক সুমি শহরে ঢুকছে। যুদ্ধ থেকে কিছুই মেলে না। আমরা চাই, যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ হোক।'
কেন্দ্রীয় সরকার বহু চেষ্টার পর অবশেষে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। সেই জন্য মোদি সরকারকে ধন্যবাদও দিচ্ছেন নামিরা ও তাঁর সঙ্গীরা। নামিরা পরিষ্কার বললেন, 'আমি ভারত সরকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রেডক্রশ এবং পোল্যান্ডের প্রশাসনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ, তাঁরা না-থাকলে আমরা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে বের হতেই পারতাম না।' তাঁরা যখন দীর্ঘদিন আটকে ছিলেন, সেই সময় ইউক্রেনের বাসিন্দারা তাঁদের সাধ্যমত সাহায্য করেছেন। সেই কারণে ইউক্রেনবাসীদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন নামিরা।
আরও পড়ুন- নেদারল্যান্ডসের মার্কিন রাষ্ট্রদূত ভারতীয় বংশোদ্ভূত শেফালি
একইসঙ্গে রাশিয়ার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ফিরে আসা ভারতীয় পড়ুয়ারা। নামিরার কথায়, 'রাশিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে সাধারণ নাগরিকদের ওপর কোনওরকম হামলা চালানো হবে না। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে যে রাশিয়ার হামলায় বহু সাধারণ নাগরিকেরও মৃত্যু হচ্ছে। বয়স্ক মানুষজন বাংকারে থাকতে পারছেন না। তাছাড়া প্রসূতি মহিলারা হাসপাতাল ছেড়ে পালাবেন কীভাবে? আমি তাই চাই, যুদ্ধ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ হোক।'
Read story in English